
ফাইল ছবি
মাদ্রাসার অর্থ আত্মসাৎ মামলায় গ্রেফতার হলেন জগন্নাথপুর উপজেলার হলিয়ারপাড়া মাদ্রাসা অধ্যক্ষ ড. মঈনুল ইসলাম পারভেজ। মঙ্গলবার (৫ সেপ্টেম্বর) সুনামগঞ্জ চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলার ৩ নং আসামী মহি উদ্দিন এমরান ও ৪ নং আসামী মঈনুল ইসলাম পারভেজ হাজিরা দিতে গেলে অধ্যক্ষ পারভেজকে কারাগারে দিল আদালত।
গ্রেফতারকৃত ড. মঈনুল ইসলাম পারভেজ জগন্নাথপুর পৌরশহরের হবিবপুর (শ্রীবৎসপুর) এর বাসিন্দা মরহুম দীনুল ইসলাম ওরফে আলিফ মিয়ার পুত্র।
মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী মোঃ গোলাম আরিফ জানান, বিজ্ঞ আদালত অধ্যক্ষ মঈনুল ইসলাম পারভেজকে গ্রেফতার নির্দেশ দেন এবং ২ নং আসামী মহি উদ্দিন এমরানকে জামিন দেন। তিনি আর জানান, আসামী মঈনুল ইসলাম পারভেজ ৬ সপ্তাহের আগামী জামিনে ছিলেন। কিন্তু এর সময়সীমা অতিক্রম করায় তাকে গ্রেফতারের নির্দেশ দেওয়া হয়।
মামলার আসামীরা হচ্ছেন আব্দুর রহিম, আলতাব আলী (আলফু), মোঃ মহি উদ্দিন এমরান, মঈনুল ইসলাম পারভেজ, মোঃ আব্দুল হক, মোঃ আব্দুল আজিজ, আব্দুর রউফ, মোঃ মোজাক্কির হোসাইন।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, উক্ত মামলার ১ নং আসামী আব্দুর রহিম ও ২ নং আসামী মোঃ মহি উদ্দিন এমরান জগন্নাথপুর উপজেলার হলিয়ারপাড়া মাদ্রাসার শিক্ষকদের বেতন, মাদ্রাসার উন্নয়ন ও শিক্ষার্থীদের নানাবিধ সুবিধার্থে এগিয়ে আসার জন্য উপজেলার মিরপুর নিবাসী জোহির উল্লাহর ছেলে যুক্তরাজ্য প্রবাসী নুর মিয়াকে অনুরোধ করেন। একসময় তাদের কথায় তিনি তিনি আবেগপ্রবণ হন। পরে ইসলামি ব্যাংক, জগন্নাথপুর শাখায় মামলার বাদী নুর মিয়া এবং ১ নং আসামী আব্দুর রহিম ও মোঃ মহি উদ্দিন এমরান সহ এই ৩ জন স্বাক্ষরিত একটি সঞ্চয় একাউন্ট খোলা হয়। উক্ত ব্যাংক একাউন্ট নাম্বার ২০৫০২৭২২০২০০২৮০১১০। ওই একাউন্ট করার পূর্বে শর্ত থাকে বা্দী নুর মিয়া ও তার পরিবারের আর্থিক সহযোগিতা অত্র একাউন্টে জমা করলে শিক্ষকদের বেতন-ভাতাসহ মাদ্রাসার উন্নয়নে ব্যয় করা হবে। এতে ২০০৯ সাল থেকে প্রতারণার কথা জানার আগ থেকে ওই একাউন্টে তিনি অর্থ জমা রাখেন। পরে তিনি দেশে এসে জানতে পারেন ১ নং আসামী আব্দুর রহিম ও ৩ নং আসামীকে দিয়ে হলিয়ারপাড়া মাদ্রাসা অধ্যক্ষ মঈনুল ইসলাম পারভেজ আরেকটি একাউন্ট করেন। এতে নুর মিয়ার সন্দেহ হলে ২০২২ সালের ২০ নভেম্বর তিনি ব্যাংক স্টেইটমেন্ট ও মাদ্রাসা কর্তৃক ব্যয়কৃত কাগজপত্র যাচাই-বাচাই করে দেখেন ৪ নং আসামী মঈনুল ইসলাম পারভেজের প্রত্যক্ষ সহযোগিতা ও পরিকল্পনা অনুযায়ী সঞ্চয় একাউন্ট হইতে ১ নং আসামী আব্দুর রহিম ও ২ নং আসামী আলতাব আলী (আলফু মিয়া) উক্ত একাউন্টে কয়েক হাজার টাকা রেখে ৪০ লক্ষ টাকা ভিন্ন ভিন্ন তারিখে উত্তোলন করে নিয়ে যান। এতে আমল গ্রহণকারী জুডিশিয়াল আদালত সুনামগঞ্জে ৪০৬/৪২০/৪৬৭/৪৬৪/৪৭১ ও ৩৪ ধারায় ৪০ লক্ষ টাকা আত্মসাতের সি/ আর মামলা -১৫ দায়ের করেন নুর মিয়া।
সুনামগঞ্জ আদালতের ভারপ্রাপ্ত পরিদর্শক দিদার উল্লাহ জানান, বিজ্ঞ আদালতে নির্দেশে অর্থ আত্মসাৎ মামলার আসামী মঈনুল ইসলাম পারভেজকে গ্রেফতার করে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।
কিছুদিন আগে মাওলানা মঈনুল ইসলাম পারভেজের বিরুদ্ধে জগন্নাথপুর পৌর এলাকার কেশবপুর গ্রামের শাহনাজ পারভিন লিসা নামের এক মহিলার কাবিননামায় তার নাম মুছে মোসাম্মৎ সাজেদা বেগম নামের অন্য মহিলার নাম বসিয়ে জালিয়াতির মাধ্যমে বিদেশ গমণে সহায়তার অভিযোগে শাহনাজ পারভীন লিসা বাদী হয়ে আমল গ্রহণকারী আদালত, জগন্নাথপুর, সুনামগঞ্জে (সিআর মামলা নং-৩৮/২০২৩) দায়ের করেন। এ মামলাটি বর্তমানে পুলিশ ব্যুারো অব ইনভেস্টিগেশন সিলেটে তদন্তাধীন আছে।
এম সি
