ওয়্যারিং পরিদর্শক সায়েমের বিরুদ্ধে অনিয়মের তদন্ত শুরু
শুক্রবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২৩, ১০:৪৫

ঠিকাদারের উপর দায় চাপানোর চেষ্টা

ওয়্যারিং পরিদর্শক সায়েমের বিরুদ্ধে অনিয়মের তদন্ত শুরু

নুর উদ্দিন সুমন, হবিগঞ্জ

প্রকাশিত: ২০২৩-১১-২০ ১১:২৩:০৫

ওয়্যারিং পরিদর্শক সায়েমের বিরুদ্ধে অনিয়মের তদন্ত শুরু

(বামে) ওয়ারিং পরিদর্শক সায়েম (ডানে) অনিয়মে স্থাপন করা বৈদ্যুতিক খুঁটি।


হবিগঞ্জ পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির ওয়্যারিং পরিদর্শক সায়েমের বিরুদ্ধে বাহুবলে সেচ লাইন নির্মাণে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ সংক্রান্ত সংবাদ প্রকাশের পর নড়ে ছড়ে বসেছে কর্তৃপক্ষ। সোমবার বিকেলে হবিগঞ্জ পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির (ইএন্ডসি) বিভাগের  সহকারী জেনারেল ম্যানেজার শফিকুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন ।  শফিকুল ইসলাম জানান, ঘটনাস্থলে আমি গিয়ে পরিদর্শন করেছি। জিএম স্যারের সাথে কথা বলে বিস্তারিত জানানো হবে । এর আগে এএসএম সায়েম এর অনিয়মের বিরুদ্ধে  হবিগঞ্জের স্থানীয় ও জাতীয় বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের ১২দিন  পর  হবিগঞ্জ পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি তদন্ত শুরু করে।

জানা যায়, বাহুবল উপজেলার সাতকাপন ইউনিয়নের মহব্বতপুর গ্রামের তাজুল ইসলাম নামে এক কৃষক সেচ পাম্পের বিদ্যুৎ  সংযোগের জন্য হবিগঞ্জ পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির বাহুবল সাব-জোনাল অফিসে আবেদন করেন। তার আবেদনের প্রেক্ষিতে বাহুবল সাব-জোনালের সহকারী জেনারেল ম্যানেজার মো: শহীদ উল্ল্যাহ হবিগঞ্জ পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির এ এসএম সায়েমকে সরেজমিন পরিদর্শন করে প্রতিবেদন দাখিল করার নির্দেশ দেন। এরই প্রেক্ষিতে ওয়্যারিং পরিদর্শক সায়েম ওই সেচ প্রত্যাশী গ্রাহককে দুটি বৈদ্যুতিক  কুটি  স্থাপন করে সেচ সংযোগ নেয়ার জন্য ডিজাইন ম্যাপ করে হবিগঞ্জ পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির সদর দপ্তরে  প্রেরণ করেন। তার ওই প্রতিবেদনের আলোকে হবিগঞ্জ পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি চলতি বছরের গত ৫ এপ্রিল দুই কুটি সহ লাইন নির্মাণ বাবদ ৯৬ হাজার টাকা জমা দিতে ওই গ্রাহককে ডি ডব্লিউ ৫২০/২৩ নং লডে অন্তর্ভূক্ত করে ই এন্ডসি বিভাগে ওই গ্রাহকের আবেদন  অনুমোদন করেন। কিন্তু ওয়্যারিং পরিদর্শক এ এসএম সায়েম অনৈতিক সুবিধা নিয়ে সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে ওই গ্রাহকের সাথে গোপনে আতাত করেন। পরে প্রথম আবেদনের ৯৬ হাজার টাকা জমা না নিয়ে  তথ্য গোপন করে ৩ মাস পর তাজুল ইসলামের নিকট থেকে পূনরায় দ্বিতীয় বার আবেদন গ্রহন করেন। শেষে নিজেই ডিজাইন ম্যাপ তৈরী করে আরেকটি প্রতিবেদন দাখিল করেন। ওই প্রতিবেদনে তিনি এক কুটি ও তার খরচ কমিয়ে সেচ পাম্পের লাইন নির্মাণ বাবদ ৯৬ হাজার টাকার পরিবর্তে ৪৮ হাজার টাকা  জমা দেয়ার চাহিদা ইস্টিমিট করেন। পরে গত ৩০ আগস্ট  ডি ডব্লিউ ১০২০/২৩ নং লডে অন্তর্ভূক্ত করে ইএন্ডসি বিভাগ ওই গ্রাহকের আবেদন  অনুমোদন করেন। এরই ধারবাহিকতায় ওই গ্রাহক অফিসে ৪৮ হাজার টাকা জমা দেন। টাকা জমা দেয়ার কিছুদিন পর  ঠিকাদার মামুন  ওয়্যারিং পরিদর্শক এ এসএম সায়েমের ডিজাইন অনুযায়ী একটি সেচ ট্রান্সফরমার কুটি স্থাপন করে ৫ কেভি ট্রান্সফরমার উত্তোলন করেন। যা ট্রান্সফরমার কুটি থেকে ১৩০ ফুট সার্ভিস ড্রপ ওই গ্রাহকের আবাসিক ঘরে ঝুলিয়ে  রাখেন।

সরেজমিনে দেখা যায়, তাজুল ইসলামের ওই আবাসিক ঘর থেকে তার সেচ বড়িংটি আরও ১০০ ফুট দূরে বিদ্যমান। যাহা সেচ সংযোগ ট্রান্সফরমার কুটি থেকে প্রায় ২৩০ ফুট দূরে অবস্থিত। সরকারি নিয়মে ১৩০ ফুটের বাহিরে সেচ সংযোগের নিয়ম না থাকলেও ওয়্যারিং পরিদর্শক এ এসএম সায়েম নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে সেচ সংযোগ থেকে ১৩০ফুটের স্থলে প্রায় ২৩০ ফুট দূরে স্থাপনের ক্যাচ ম্যাপ প্রদান করেন।

অভিযুক্ত এ এসএম সায়েমের সাথে মুঠোফোনে আলাপ করলে তিনি প্রথমে অনিয়মের বিষয়টি অস্বীকার করলেও তার অনিয়মের দায় চাপালেন ঠিকাদারের উপর।

ঠিকাদার মামুন বলেন, আমার কাজের কোন অনিয়ম নেই। যারা অনিয়ম করেছেন তাদের পিঠ বাচাঁতে দায় আমার উপর চাপানোর চেষ্টার পায়তারা চলছে। আমি  ওয়্যারিং পরিদর্শক এএসএম সায়েমের ক্যাচ ম্যাপ অনুযায়ী কাজ করেছি।

হবিগঞ্জ পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির একাধিক সাধারণ সেচ গ্রাহকরা জানান, ১৩০ ফুটের উপরে দুরুত্ব থাকলে প্রায় ৪৮হাজার টাকা দিয়ে  কুটি ক্রয় করতে হয়। আবার মোটা অংকের টাকা দিলে ডিজাইন পরিবর্তন করে সেচ লাইনের সুযোগ করে দেয়া হয়। ভুক্তভোগী গ্রাহকরা ২০২২/২৩ অর্থবছরের সবকটি সেচ সংযোগের  সঠিক তদন্ত করলে তার অনিয়ম দুর্নীতির তথ্য বেরিয়ে আসবে বলে গ্রাহকদের দাবী।

JA



This is the free demo result. For a full version of this website, please go to Website Downloader