
সুমাইয়ার
মোবাইল ফোনের মাধ্যমে রাজনগর উপজেলার মুন্সিবাজার ইউনিয়নের মেদিনিমহল গ্রামের সেলিম আহমদের মেয়ে সুমাইয়া আক্তারের (১৮) পরিচয় হয়েছিল কমলগঞ্জ উপজেলার আদমপুর ইউনিয়নের বনগাঁও গ্রামে এমানি মিয়ার ছেলে ইমরান মিয়ার (২৫) সঙ্গে। সেই পরিচয় থেকেই তাদের মাঝে গড়ে উঠে প্রেমের সম্পর্ক। সবকিছু উপেক্ষা করে প্রেমিকের হাত ধরে পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করেছিলেন প্রেমিক ইমরান মিয়াকে।
বিয়ের পরে স্বামীর ঘরেই উঠেছিল সে। অপরদিকে বিয়ের পর পরিবার উদ্ধার বা মামলাও করেনি এবং তার সঙ্গেও আর যোগাযোগ রাখেনি। কিন্তু সুমাইয়ার কপালে সুখ টিকেনি বেশি দিন। বিয়ের এক বছর হওয়ার আগেই স্বামীর নির্যাতনে প্রাণ গেল তার। মারা যাওয়ার পর হাসপাতালেও ঠাই হয়েছিল বেওয়ারিশ হিসেবে। গত রবিবার লাশ হাসপাতালে রেখে পালিয়ে যায় সুমাইয়ার স্বামী। পরে মঙ্গলবার (২৭ জুন) সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাপাতালে সুমাইয়ার ময়না তদন্ত শেষে নিজ বাড়িতে দাফন করা হয়।
নিহত সুমাইয়ার মামা কারমান আলী বলেন- সুমাইয়া আক্তার পালিয়ে বিয়ে করেছিল ইমরান মিয়াকে। তাদের বিয়ের পর আর আমরা যোগাযোগ রাখি নি তার সাথে। যে পরিবারের ইজ্জতের কথা চিন্তা করেনি তার পিছু নিয়ে আর মানুষ জানিয়ে কী-বা লাভ। তাই যোগাযোগ ছিল না। গত রবিবার বিকালে সুমাইয়ার স্বামী ইমরান মিয়ার চাচা আমাদের বাড়ির মোবাইলে ফোন দিয়ে বলেন তোমাদের মেয়েকে দেখতে হলে উসমানি মেডিকেলে আসো- সে অসুস্থ্য। কেন কিভাবে অসুস্থ্য জানতে চাইলে তিনি আমাদের হুমকি ধমকি দেন। তখন আমরা আশপাশের লোকদের কাছে খবর নিয়ে জানতে পারি সুমাইয়ার স্বামী তাকে বেশ নির্যাতন করেছে। খুব বেশি মারধর করা করেছে। এরপর ওই দিনই আমরা সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে তার কোনো সন্ধান পাচ্ছিলাম না। এক আত্মীয়র মাধমে খোঁজ নিয়ে জানতে পারি- সুমাইয়ার লাশ ওসমানীর হিমাগারে বেওয়ারিশ হিসেবে রয়েছে। কর্তৃপক্ষ সুমাইয়ার মা লুৎফা বেগমকে দেখতে দেয়। পরে লাশ গ্রহণের জন্য তারা সিলেট কোতোয়ালি থানায় যোগাযোগের পরামর্শ দেয়। থানায় যোগাযোগ করলে তারা কমলগঞ্জ থানায় যোগাযোগ করে দুই দিন পর লাশ আমরা গ্রহণ করেছি।
সুমাইয়ার মামা করমান আলী আরো বলেন, পালিয়ে বিয়ে করায় আমরা যোগাযোগ করিনি। কিন্তু যাদের ভালোবেসে বিয়ে করেছিল তাদের হাতেই নিহত হলো মেয়েটি। যখন মেয়েটির মৃত্যুর খবর জানতে পরেছি আর ঘরে থাকা সম্ভব হয়নি। তাই হাসপাতালে ছুটে এলাম।
তিনি বলেন, মঙ্গলবার বিকেলে লাশ গ্রহণ করেছি। এর আগে ওসমানী হাসপাতালে ময়না তদন্ত করা হয়েছে। এখন কমলগঞ্জ থানাকে দেখিয়ে লাশ দাফন করবো।
কমলগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সঞ্জয় কুমার চক্রবর্তী বলেন, এ ব্যাপারে এখনো কেউ কোনো অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জৈন্তাবার্তা/এমকে
