জৈন্তাপুরে বলৎকারের প্রতিশোধ নিতে প্রাইভেট শিক্ষককে হত্যা করে মাহি
শুক্রবার, ১১ অক্টোবর ২০২৪, ০২:৫৩

জৈন্তাপুরে বলৎকারের প্রতিশোধ নিতে প্রাইভেট শিক্ষককে হত্যা করে মাহি

জৈন্তাপুর প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৫/০৫/২০২৪ ১১:১৪:২৭

জৈন্তাপুরে বলৎকারের প্রতিশোধ নিতে প্রাইভেট শিক্ষককে হত্যা করে মাহি

ছবি: নিজস্ব


২০২২ সালের ৪ঠা ডিসেম্বর জৈন্তাপুর উপজেলার দরবস্ত তেলিজুরী গ্রামের রহমত আলির ছেলে প্রাইভেট শিক্ষক মুক্তারুল হক (৩৬) হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) সিলেট।

হত্যাকান্ডের এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ইফতেখার রশিদ মাহি (২২) নামে এক কিশোরকে গ্রেফতার করেছে পিবিআই। মাহি দরবস্ত তেলিজুরী গ্রামের বজলুর রশিদ শামিমের পুত্র।


গত ১৪ই মে (মঙ্গলবার) পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন  (পিবিআই) এর সিলেট জেলা ইউনিট ইনচার্জ পুলিশ সুপার মুহাম্মদ খালেদ উজ জামান স্বাক্ষরিত এক প্রেস রিলিজে তা জানানো হয়।


পিবিআই সূত্রে জানা যায়,  বলৎকারের প্রতিশোধ নিতে এ হত্যাকান্ড চালিয়েছে মাহি। ২০২২ সালের ৪ঠা ডিসেম্বর মুক্তারুলের বাড়ীর সামনে রাস্তায় তার মরদেহ পাওয়া গেলে ওই ঘটনায় নিহতের পিতা বাদী হয়ে জৈন্তাপুর মডেল থানায় ৬ জনকে আসামি করে ৪/৫ জনকে অজ্ঞাত করে পূর্ব বিরোধের জেরে হত্যা কান্ড চালাতে পারে এই মর্মে মামলা দায়ের করেন। থানা পুলিশ কিছুদিন তদন্ত করার পর তদন্তভার গ্রহন করে পিবিআই সিলেট।


পরে পিবিআই সিলেটের জেলা ইউনিট ইনচার্জ পুলিশ সুপার মুহাম্মদ খালেদ উজ জামানের নেতৃত্বে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই ঝলক মহন্ত তদন্ত করে ও তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার করে প্রকৃত হত্যা রহস্য উদঘাটন করতে সক্ষম হন।


পিবিআই সূত্রে জানা যায়, ১৩ই মে রাজধানীর মালিবাগ চৌধুরীপাড়া এলাকা হতে একটি গার্মেন্টস থেকে মাহিকে গ্রেফতার করে পিবিআই। এরপর জিজ্ঞাসাবাদে সে জানায়, বলৎকারের প্রতিশোধ নিতে সে তার প্রাইভেট শিক্ষককে হত্যা করে।


আসামি মাহি বলেন, ২য় শ্রেনীতে অধ্যয়নকালে মুক্তারুলের নিকট সে প্রাইভেট পড়ে আসছিল। পঞ্চম শ্রেনীতে উঠার পর মুক্তারুল তাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে বলৎকার করতে থাকে ও সে দৃশ্য মোবাইল ফোনে ভিডিও ধারণ করতো। 


এভাবে অশ্লীল দৃশ্য প্রচারের ভয়ভীতি ও পরীক্ষায় ফেল করানোর ভয় দেখিয়ে তার ক্ষতিসাধন করে আসছিলো মুক্তারুল। এ পর্যায়ে বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে মাহি প্রতিবাদ করতে থাকলে তার নবম শ্রেনী পড়ুয়া বোনকে ক্ষতি করবে বলে হুমকি দেয় প্রাইভের শিক্ষক মুক্তারুল।  এই হুমকি সহ্য করতে না পেরে মুক্তারুলকে হত্যার পরিকল্পনা করে মাহি। 

২০২২ সালের ৩রা ডিসেম্বর মুক্তারুল মাহিকে সন্ধ্যায় তার বাড়ীর পিছনে ডেকে পাঠালে মাহি সেখানে থাকা কাঠের বর্গা দিয়ে মুক্তারুলকে উপুর্যুপরি আঘাত করে হত্যা করে। পরে মৃতদেহ টেনে হিঁচড়ে বাড়ীর রাস্তার পাশে ফেলে দেয়। পরে মাহি বাড়ীতে এসে পুকুরে গোসল করে দুই রাকাত নফল নামাজ আদায় করে এবং রাতে ফুটবল বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার লাইভ ম্যাচ দেখে বলে জানায় পিবিআই।পরে সে রামপ্রসাদ নানাবাড়ীতে আশ্রয় নেয়। সেখানে কয়েকদিন থাকার পর ঢাকায় খালার বাড়ীতে গিয়ে গার্মেন্টসে কাজ নেয়।


এ বিষয়ে পিবিআই সিলেটের ইউনিট ইনচার্জ পুলিশ সুপার মুহাম্মদ খালেদ উজ জামান বলেন গ্রেফতারের পর ১৪ই মে ইফতেখার রশীদ মাহিকে বিজ্ঞসিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হলে সে ফৌজদারি কার্যবিধি ১৬৪ ধারায় দোষ স্বীকার করে স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি প্রদান করে।


এস এইচ টি/