প্রতিবাদী রবীন্দ্রনাথ
বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৫, ১১:৩২

‘নাইট’ প্রাপ্তির ১০৮ বছর

প্রতিবাদী রবীন্দ্রনাথ

জৈন্তা বার্তা ডেস্ক

প্রকাশিত: ০৩/০৬/২০২৪ ০৩:৪১:২৮

প্রতিবাদী রবীন্দ্রনাথ


ড. মিল্টন বিশ্বাস

কবি বাল্যকাল থেকে সাম্রাজ্যবাদী ইংরেজদের বলপ্রয়োগ ও দখলদারি নীতিকে ঘৃণা করে এসেছেন। ‘পথ ও পাথেয়’, ‘সদুপায়’, ‘দেশহিত’, ‘ছোটো ও বড়ো’, ‘স্বাধিকারপ্রমত্তঃ’, ‘বাতায়নিকের পত্র’ প্রভৃতি প্রবন্ধে তা প্রকাশ করেছেন। তারই ধারাবাহিকতায় ব্রিটিশরাজের দেয়া ‘নাইটহুড’ উপাধি ত্যাগ করে বীভৎস পাশবিকতার প্রতিবাদ করেন তিনি। 

একশ আট বছর আগে জালিয়ানওয়ালাবাগের হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর ‘নাইটহুড’ উপাধি ত্যাগ করেছিলেন; স্তম্ভিত হয়েছিল বিশ্ববিবেক। ৫৮ বছর বয়সী সাহসী কবি সেদিন আমাদের শুনিয়েছিলেন মুক্তির মন্ত্র; শুদ্ধ প্রত্যয় নিয়ে অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য উদ্দীপনা দিয়েছিলেন। অবিভক্ত ভারতের পাঞ্জাবের অমৃতসর শহরের জালিয়ানওয়ালাবাগে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের দমননীতির পৈশাচিকতার দিনটি ছিল ১৯১৯ সালের ১৩ এপ্রিল। অথচ ১৯১৯ সালের ১৩ এপ্রিল ছিল পাঞ্জাবি নববর্ষের উৎসব; শিখ সম্প্রদায়ের কাছে এটি ছিল একটি পবিত্র দিন। অমৃতসর নগর সেদিন কল-কাকলিতে মুখরিত, বর্ণিল সাজে সজ্জিত, মেলার আয়োজনে উৎফুল্ল। অবশ্য এই আনন্দের দিনেও সেখানে একটি প্রতিবাদ সভার আয়োজন ছিল। 

ব্রিটিশ সরকার ১৯১৯ সালের ১৮ মার্চ সন্ত্রাসবাদবিরোধী ও দমনমূলক আইন হিসেবে ‘রাউলাট আইন’ প্রবর্তন করে। এই আইনের অধীনে বিনা কারণে গ্রেপ্তার, অন্তরীণ ও সংক্ষিপ্ত সাক্ষ্য প্রমাণহীন বিচার ও বন্দিত্বের বেপরোয়া পদক্ষেপ গৃহীত হয়। গান্ধীজি ১৯১৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে ভারতজুড়ে ‘সত্যাগ্রহ’ ও অহিংস আন্দোলন শুরু করেন। রাউলাট আইনের দমন পীড়নের ফলে বিশেষ করে পাঞ্জাবে সত্যাগ্রহ আন্দোলন এক চূড়ান্ত রূপ ধারণ করে। জনসাধারণের হিংসাত্মক ও বিশৃঙ্খল কার্যকলাপের ফলে গান্ধীজির নেতৃত্ব অকার্যকর হয়ে পড়ে। রবীন্দ্রনাথ ভারতবর্ষের পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করে গান্ধীজিকে আগেই সতর্ক করেছিলেন। ১৬ এপ্রিল ওহফরধহ উধরষু ঘবংি-এ প্রকাশিত ১২ এপ্রিলে লেখা সেই পত্রে গান্ধীজিকে তিনি জানান-

“আমি জানি, আপনার আদর্শ হলো যা কিছু ন্যায্য তার সাহায্যে অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই করা। কিন্তু এ ধরনের সংগ্রাম বীরদের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য, এত প্রযোজ্য নয় মুহূর্তের আবেগতাড়িত মানুষদের ক্ষেত্রে। একদিকের দুষ্কর্ম স্বাভাবিকভাবেই অন্যদিকে দুষ্কর্মকেই ডেকে আনবে। অন্যায় ডেকে আনবে হিংসাকে এবং অপমান আনবে প্রতিহিংসাকে। দুর্ভাগ্য যে সেই অপশক্তির আবির্ভাব ইতিমধ্যেই ঘটেছে।”

স্বাধীনতা সংগ্রামের নিয়ন্ত্রণ ‘আবেগতাড়িত’ জনতার হাতে চলে যাওয়ার আশঙ্কা ছিল যথার্থই। জালিয়ানওয়ালাবাগের হত্যাকাণ্ড ছিল আবেগতাড়িত জনতার ওপর নিষ্ঠুরতার চূড়ান্ত রূপ। আর ওই নৃশংসতার বিরুদ্ধে চরম ধিক্কার ও ঘৃণাবোধ থেকে রবীন্দ্রনাথ ‘নাইটহুড’ (স্যার টাইটেল) উপাধি ত্যাগ করেন। ভাইসরয় লর্ড চ্যামসফোর্ডকে লেখা চিঠিতে তিনি তার নাইটহুড প্রত্যাখ্যান করেন, যা ভারতীয় স্বাধীনতার ইতিহাসে প্রতিবাদ জানাবার এক ঐতিহাসিক দলিল হয়ে আছে। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে সম্রাট ৫ম জর্জ ১৯১৫ সালে নাইটহুড উপাধি প্রদান করেছিলেন। 

২. প্রথম মহাযুদ্ধে ব্রিটিশরাজকে সহায়তা করা হয় তিলক-বেসান্ত-গান্ধীজির নেতৃত্বে থেকেই। যুদ্ধের ধ্বংসলীলা ও তার পরিণতি দেখে রবীন্দ্রনাথ গভীর বেদনায় ক্ষতবিক্ষত হয়েছিলেন। ভারত ও বিশ্বের পরিস্থিতি কবির মানসিক যন্ত্রণার কারণ হয়েছিল। এরই মধ্যে বিশ্বমানবতার আন্তর্জাতিক মিলনকেন্দ্র রচিত হলো ‘বিশ্বভারতী’র ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের মধ্য দিয়ে। বিচলিত ও চিন্তিত রবীন্দ্রনাথ তার স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথে অগ্রসর হন। এসময় তিনি ‘বাতায়নিকের পত্র’ প্রবন্ধে সাম্রারাজ্যবাদের স্বরূপ উদঘাটন করে পশ্চিমি দুনিয়ার বস্তুতান্ত্রিক ও লোভ লালসার প্রবল তাড়নাকে তিরস্কার করেন। 

১৯১৮ সালে ৮ জুলাই বিপ্লবীদের দমনার্থে ‘রাউলাট কমিটি’র তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পর জনমনে তীব্র অসন্তোষ মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। আন্দোলনের প্রথমে ৩০ মার্চ দেশের সর্বত্র হরতাল পালনের ঘোষণা থাকলেও পরিবর্তন করে ৬ এপ্রিল হরতালের দিন নির্ধারিত হয়। কোথাও কোথাও পূর্বঘোষিত অর্থাৎ ৩০ মার্চ আবার কোথাও কোথাও ৬ এপ্রিলে বিক্ষুব্ধ জনতা শোভাযাত্রা বের করে। দিল্লিতে জনতার সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়: হতাহত হয় অনেকেই। কলকাতা, অমৃতসর, মুম্বাই, আমেদাবাদেও গুলি চলে শোভাযাত্রার ওপর। গান্ধীজি পাঞ্জাব ও দিল্লির অবস্থা শান্ত ও নিয়ন্ত্রণ করার জন্য মুম্বাই থেকে দিল্লির উদ্দেশ্যে পথযাত্রা করলে পুলিশ তাকে বলপূর্বক আটক করে মুম্বাইয়ে ফিরিয়ে আনে ৯ এপ্রিল। তিনি গ্রেপ্তার হয়েছেন খবর ছড়িয়ে পড়লে সারা দেশের জনতা ক্রোধে ক্ষিপ্ত হয়ে রাস্তায় নামে। জনতা তখন পুলিশি দমননীতি প্রতিরোধে ভীষণ মারমুখী; অপরদিকে প্রস্তুত পালটা আক্রমণে। এরই মধ্যে পাঞ্জাবের অমৃতসরে ১০ এপ্রিল ডা. কিচলু ও ডা. সত্যপালকে গ্রেপ্তার করে অজ্ঞাতস্থানে অন্তরীণ করা হয়। 

পাঞ্জাবের গভর্নর স্যার মাইকেল কঠোর হাতে এই আন্দোলন দমন করার নির্দেশ দেন। ১০ এপ্রিল সেখানে মার্শাল ল ঘোষিত হয়। ফলে পাঞ্জাবের সংবাদপত্র প্রকাশ বন্ধ হয়ে যায়; সারা দেশ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় এলাকাটি। যে-মুহূর্তে গান্ধীজি সত্যাগ্রহ আন্দোলন প্রত্যাহারের কথা চিন্তা করছেন ঠিক সেসময় সংগ্রামের নেতৃত্ব জনতার হাতে চলে যায়। ১৯১৯ মালের ১৩ এপ্রিল বাংলা নববর্ষের দিনে তারই প্রতিদান দিতে হলো জনতাকে। এই দিন জালিয়ানওয়ালাবাগের প্রায় বিশ হাজার জনতার ওপর জেনারেল রেজিনাল্ড ডায়ারের নির্দেশে দেড়শ’ সৈন্য টানা ১০ মিনিটে প্রায় ১৬৫০ রাউন্ড গুলিবর্ষণ করে। সরকারি হিসেবে ৪০০ ব্যক্তি নিহত ও ১২০০ জন আহতের সংবাদ পাওয়া যায়। যদিও নিহতের সংখ্যা হাজারের ওপর হবে বলে ঐতিহাসিকরা মনে করেন। 

পরে বিচারে ৫১ জনের ফাঁসি ও ৪৬ জনের দ্বীপান্তর এবং বাকি সকলের ২ থেকে ১৩ বছর পর্যন্ত সশ্রম কারাদণ্ড হয়। এই ঘটনার পর পাঞ্জাব গভর্নর ও ডায়ারকে অভিনন্দন জানানো হয়েছিল। এই বীভৎস ও পৈশাচিক হত্যাকাণ্ডের যথার্থ সংবাদ দেশবাসী সঙ্গে সঙ্গে জানতে পারেনি। তবে গান্ধীজি জানতে পেরে ১৮ এপ্রিল সত্যাগ্রহ আন্দোলন প্রত্যাহার করে নেন। তার কাছে জনসাধারণের হিংসাত্মক ও বিশৃঙ্খল কার্যকলাপ বড় হয়ে দেখা দিয়েছিল, ইংরেজ সরকারের দমনমূলক আচরণের বিপরীতে। 

মার্শাল ল ও সংবাদপত্রের ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকায় রবীন্দ্রনাথ শান্তিনিকেতনে বসে পাঞ্জাবের প্রকৃত ঘটনা জানতে পারেননি। তবে মে মাসের শেষদিকে ওই হত্যাকাণ্ডের খবর পৌঁছানো মাত্র রবীন্দ্রনাথ কালবিলম্ব না করে কলকাতায় উপস্থিত হন। এমনকি শান্তিনিকেতনে ২৯ মে এক সামাজিক অনুষ্ঠানে তার যে পৌরহিত্য করার কথা ছিল, তা বাতিল করে দেন; সিদ্ধান্ত নেন মহাত্মা গান্ধীকে সঙ্গে নিয়ে তারা দুজনে পাঞ্জাবে গিয়ে ওই নারকীয় হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ করবেন। যদি এর জন্য গ্রেপ্তার হতে হয় তাও হবেন। 

এই ইচ্ছের কথা ব্যক্ত করে কবি সি.এফ.অ্যানড্রুজকে পাঠান গান্ধীজির কাছে। কিন্তু গান্ধীজির ওপর সেই সময় পাঞ্জাব প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা ছিল। তাই পাঞ্জাব যেতে রাজি হননি। রবীন্দ্রনাথ হতাশ হন। তিনি চেয়েছিলেন পাঞ্জাবে যাওয়ার মধ্য দিয়ে ব্রিটিশের আইন লঙ্ঘন করে এক বিকল্প প্রতিবাদ আন্দোলনের সূচনা করতে। যা স্বাধীনতা আন্দোলনে এক নতুন মাত্রা যোগ করত। বিশেষত হিংসাত্মক আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে বিপথগামিতার চরিত্রকে সংযত করা যেত। সমস্ত আন্দোলনটা অসংযত জনতার থেকে আবার যথার্থ নেতৃত্বের হাতে ফিরে আসত। কিন্তু মহাত্মা গান্ধী সে বিষয়ে আগ্রহী ছিলেন না। 

কলকাতায় রবীন্দ্রনাথ ইতিবাচক সাড়া পাওয়ার আশায় বাংলার কংগ্রেসী নেতৃত্বের অন্যতম শীর্ষ নেতা চিত্তরঞ্জন দাশের শরণাপন্ন হন। কবির ভাষাতেই সেই পরিস্থিতিটা শোনা যাক। কবি চিত্তরঞ্জনকে বলছিলেন- “বললুম যে, এই সময় সমস্ত দেশ মুখ বন্ধ করে থাকবে, এ অসহ্য। তোমরা প্রতিবাদ সভা ডাকো। আমি নিজেই বলছি যে, আমি সভাপতি হব।’ চিত্ত একটু ভেবে বললে, ‘বেশ। আর কে বক্তৃতা দেবে?’ আমি বললুম, ‘সে তোমরা ঠিক করো।’ চিত্ত একটু ভাবল- বললে, আপনি যদি সভাপতি হন, তারপর আর কারুর বক্তৃতা দেওয়ার দরকার হয় না। আপনি একা বললেই যথেষ্ট। আমি বললাম, তাই হবে। এবার তবে সভা ডাকো। তখন চিত্ত বললে, আপনি যখন একা বক্তৃতা দেবেন, আপনি সভাপতি, তখন সবচেয়ে ভালো হয় শুধু আপনার সভা ডাকা। বুঝলুম, ওদের দিয়ে কিছু হবে না। তখন বললুম, আচ্ছা আমি ভেবে দেখি। 

কবিকে নিজের পথ নিজেকেই বের করে নিতে হলো। মধ্যরাত্রে বসলেন বড়লাট লর্ড চেমসফোর্ডকে একটি পত্র লিখতে। ভোর ৪টার সময় শেষ করলেন সেই চিঠি। এই চিঠিই হলো ৩০ মের সেই ঐতিহাসিক চিঠি যার মধ্যে দিয়ে তিনি বর্জন করলেন ব্রিটিশের দেয়া ‘নাইটহুড’ উপাধি। এই পদত্যাগপত্র ছিল ব্রিটিশের বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে কোটি কোটি ভারতবাসীর ‘আপত্তিকে বাণীদান’ করার দায়িত্ব নিজে গ্রহণ করা এবং ‘নিজের কথা নিজের মতো করে’ ব্যক্ত করার এক প্রতিবাদলিপি। তিনি লিখেছেন- “হতভাগ্য পাঞ্জাবীদিগকে যে রাজদণ্ডে দণ্ডিত করা হইয়াছে, তাহার অপরিমিত কঠোরতা ও সেই দণ্ড প্রয়োগবিধির বিশেষত্ব, আমাদের মতে কয়েকটি আধুনিক ও পূর্বতন দৃষ্টান্ত বাদে সকল সভ্য শাসনতন্ত্রের ইতিহাসে তুলনাহীন। অন্তত আমি নিজের সম্বন্ধে এই কথা বলিতে পারি যে, আমার যে সকল স্বদেশবাসী তাহাদের অকিঞ্চিৎকরতার লাঞ্ছনায় মনুষ্যের অযোগ্য সম্মান সহ্য করিবার অধিকারী বলিয়া গণ্য হয়, নিজের সমস্ত বিশেষ সম্মান-চিহ্ন বর্জন করিয়া আমি তাহাদেরই পার্শ্বে নামিয়া দাঁড়াইতে ইচ্ছা করি। রাজাধিরাজ ভারতেশ্বর আমাকে ‘নাইট’ উপাধি দিয়া সম্মানিত করিয়াছেন, সেই উপাধি পূর্বতন যে রাজপ্রতিনিধির হস্ত হইতে গ্রহণ করিয়াছিলাম তাঁহার উদার-চিত্ততার প্রতি চিরদিন আমার পরম শ্রদ্ধা আছে। উপরে বিবৃত কারণবশত বড় দুঃখেই আমি যথোচিত বিনয়ের সহিত শ্রীলশ্রীযুক্তের নিকট অদ্য এই উপরোধ উপস্থাপিত করিতে বাধ্য হইয়াছি যে, সেই ‘নাইট’ পদবী হইতে আমাকে নিষ্কৃতিদান করিবার ব্যবস্থা করা হয়।”

এই প্রতিবাদ সম্ভব হয়েছিল কারণ কবি বাল্যকাল থেকে সাম্রাজ্যবাদী ইংরেজদের বলপ্রয়োগ ও দখলদারি নীতিকে ঘৃণা করে এসেছেন। ‘পথ ও পাথেয়’, ‘সদুপায়’, ‘দেশহিত’, ‘ছোটো ও বড়ো’, ‘স্বাধিকারপ্রমত্তঃ’, ‘বাতায়নিকের পত্র’ প্রভৃতি প্রবন্ধে তা প্রকাশ করেছেন। তারই ধারাবাহিকতায় ব্রিটিশরাজের দেয়া ‘নাইটহুড’ উপাধি ত্যাগ করে বীভৎস পাশবিকতার প্রতিবাদ করেন তিনি। অন্যায়, অত্যাচার-নিপীড়নের বিরুদ্ধে আজীবন সংগ্রামশীল পরাধীন লাঞ্ছিত স্বদেশবাসীর জন্য কাতর রবীন্দ্রনাথ সমকালীন বিশ্বে রলাঁ, বারবুস ও গোর্কির মতোই ভূমিকা পালন করেছিলেন। 

জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ড ও রবীন্দ্রনাথের ‘নাইটহুড’ উপাধি ফিরিয়ে দেওয়ার ঘটনা সৃষ্টি করেছিল ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে প্রবল ঘৃণা। আর তীব্রতর হয়েছিল ভারতীয়দের দেশপ্রেম ও স্বাজাত্যবোধের আবেগ। কবি ওই হত্যাকাণ্ডের ঘটনাকে মানবাধিকারের দৃষ্টিকোণ থেকে দেখেছিলেন। এজন্য একশ আট বছর পরও রবীন্দ্রনাথের ওই প্রতিবাদী চেতনা আমাদের পথ চলার নিশানা। 

এলএইচ