ছবি: নিজস্ব
সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলার ঘুঙ্গিয়ারগাঁও বাজারের ফার্মেসী ব্যবসায়ী বিপ্লব রায়ের দোকান ঘরের জায়গা দখলের চেষ্টা করার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় উপজেলা আওয়ামীলীগ নেতা ইকরামুল হোসেনের বিরুদ্ধে। এছাড়াও দোকান ঘর নির্মাণ করতে হলে আওয়ামীলীগের এই নেতাকে তিন লাখ টাকা চাঁদা দিতে হবে বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) রাতে ৪ জনকে আসামী করে শাল্লা থানায় ও বৃহস্পতিবার(১৯ সেপ্টেম্বর) সকালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে এমন অভিযোগ করেছেন ঘুঙ্গিয়ারগাঁও বাজারের হিন্দু ব্যবসায়ী বিপ্লব রায়।এছাড়াও অনুলিপি দেয়া হয়েছে জেলা প্রশাসক ও যৌথ বাহিনীর দিরাই শাল্লা জোনের কমান্ডারকে।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, বিপ্লব রায় দীর্ঘদিন ধরে ঘুঙ্গিয়ারগাঁও বাজারে ফার্মেসীর ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে। সেই সুবাধে একজন প্রকৃত ব্যবসায়ী হিসেবে সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক ও শাল্লা উপজেলা সহকারি কমিশনারের (ভূমি) কার্যালয় থেকে দোকান ঘর নির্মাণের জন্য দুটি লাইসেন্সে এক শতক জায়গা বন্দোবস্ত পান। যার বিবিধ (বাজার ভিট লাইসেন্স) মোকদ্দমা নং উ:ভ‚:অ: ৩১/২০২৩ ও জে:প্র: নং ৫১৬/২০২৩-২৪ মূলে এবং বিবিধ (বাজার ভিট লাইসেন্স) মোকদ্দমা নং উ:ভ‚:অ: ২৭/২০২৩ ও জে:প্র: নং ৫১২/২০২৩-২৪।
বন্দোবস্ত মূলে ভ‚মির সীমানা নির্ধারণ করে ঘর নির্মাণ কাজ শুরু করলে গত ২ সেপ্টেম্বর নামধারী আওয়ামীলীগ নেতা ইকরামুল হোসেনের নেতৃত্বে নির্মাণ কাজ বন্ধ করা হয়। পরবর্তীতে ৪ সেপ্টেম্বর পুনরায় নির্মাণ কাজ শুরু করলে আবারো ইকরামুলের নেতৃতে অপরিচিত দুজন মহিলাসহ আরো কয়েকজন আসিয়া জোরপূর্বক কাজ বন্ধ করে দেয়। পরে আবারো ১২ সেপ্টেম্বর কাজ শুরু করলে অভিযুক্ত ইকরামুল, তার ভাই ইরান, আত্মীয় উস্তার মিয়ার ও ঘুঙ্গিয়ারগাঁও বাজারের বাসিন্দা বাদশা মিয়া আসিয়া বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি ও হুমকি প্রদর্শন করে নির্মাণ শ্রমিকদের বিতাড়িত করে ভিটি দখলের চেষ্টা করে। এই বিষয়টি নিয়ে আলোচনার সিদ্ধান্ত হলে এরই মধ্যে ১৩ সেপ্টেম্বর রাত ১২ টা ৪৮ মিনিটে অভিযুক্ত ইকরামুল ভ‚ক্তভোগী বিপ্লব রায়ের ফার্মেসীতে এসে ৩ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবী করে। অন্যথায় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়ার হুমকি দেয়।
শুধু তাই নয়, ইকরামুল হোসেন আওয়ামীলীগের শাসনামলে উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মাহমুদের(আল আমিন) অনুসারী হয়ে দীর্ঘদিন ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে সাধারণ লোকজনের সাথে নানা অন্যায় অবিচার করেছে বলেও এলাকায় চাওর রয়েছে। এছাড়াও ৫ আগস্ট আওযামীলীগ সরকার পদত্যাগ করলে অভিযুক্ত ইকরামুল হোসেন বিএনপির রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত বলে এলাকায় প্রকাশ করে।
এবিষয়ে অভিযুক্ত ইকরামুল হোসেনের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান সংখ্যালগুর জায়গা দখল ও চাঁদার বিষয়ে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। তবে বিপ্লব রায়ের কাজে কোনো বাধা দেননি বলে তিনি জানান।
তবে অভিযোগকারী বিপ্লব রায় জানান, আওয়ামীলীগ নেতা ইকরামুল হোসেনের নেতৃত্বেই গত ১৫/ ২০ দিন ধরে নির্মাণ কাজে বাধা দিয়ে ভিটি দখলের চেষ্টা করে আসছে। এমনকি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়ার হুমকি দেয়া হয়েছে। এছাড়া ইকরামুল হোসেন ও তার সিন্ডিকেট চক্রকে ৩ লাখ টাকা চাঁদা দিতে পারলে নির্মাণ কাজ চালু করা যাবে বলে আশ্বস্থ করে।
শাল্লা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) মুখলেসুর রহমানের সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন, অভিযোগ পেয়েছি আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
জৈন্তাবার্তা / মনোয়ার