মাধবপুরের ১২টি বিদ্যালয়ে ৪ বছরেও শেষ হয়নি সম্প্রসারণ কাজ
বুধবার, ০৯ জুলাই ২০২৫, ১২:০৮ PM

মাধবপুরের ১২টি বিদ্যালয়ে ৪ বছরেও শেষ হয়নি সম্প্রসারণ কাজ

জালাল উদ্দিন লস্কর ,মাধবপুর প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২৯/১১/২০২৪ ১১:৩১:০৪ AM

মাধবপুরের ১২টি বিদ্যালয়ে ৪ বছরেও শেষ হয়নি সম্প্রসারণ কাজ

ছবি: নিজস্ব


ঠিকাদারের খামখেয়ালীপনা আর সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের যথাযথ তদারকি না থাকায় হবিগঞ্জের মাধবপুরে চতুর্থ প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন প্রকল্পের (পিইডিপি-৪) আওতায় ১২টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ঊর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণের কাজ গত ৪ বছরেও শেষ হয়নি। কবে শেষ হবে তা জানে না কেউ। 

জানা যায়, ২০২১ সালে মাধবপুর উপজেলার ১৪টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ঊর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণের কাজ শুরু হয়। গত ৪ বছরে সাকুচাইল ও মনতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নামের দুটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কাজ শেষ হলেও অন্য ১২টি বিদ্যালয়ের কাজ ঝুলিয়ে রেখেছেন ঠিকাদার। 

প্রতিটি বিদ্যালয়ের জন্য ব্যয় ধরা হয় ৬০ লাখ টাকা। সেই হিসাবে ১৪টি বিদ্যালয়ের জন্য ৮ কোটি ৪০ টাকা টাকা বরাদ্দ হয়। প্রতিটি বিদ্যালয়ে বিদ্যমান ভবনে বাড়তি ৩টি ফ্লোর স্থাপনের লক্ষ্যে ঊর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণ প্রকল্পের মাধবপুর উপজেলার কাজ পায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বেঙ্গল ট্রেডার্স ও মেসার্স গোলাম ফারুক নামের দুটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। তবে জানা গেছে, দুটি প্রতিষ্ঠানেরই মালিক আবুল কালাম নামের এক ব্যক্তি। 

২০২১ সালে বিদ্যালয়গুলোতে ঊর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণ কাজ শুরুর পর কোনোটিতে একটি, কোনোটিতে দুটি ফ্লোরের কাঠামো ও ছাদ নির্মানের পর কাজ আর অগ্রসর হয়নি। দফায় দফায় ঠিকাদার কাজ ফেলে লাপাত্তা হওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। ছাতিয়াইন ইউনিয়নের শিমুলঘর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সম্প্রসারণ কাজের বেলায় ঠিকাদারের লোকজন একাধিকবার কাজ ফেলে লাপাত্তা হয়ে যায়। বিদ্যালয়টিতে সম্প্রসারণ কাজের অন্তত ৫০ ভাগ এখনও বাকি রয়েছে। এ অবস্থায় সপ্তাহখানেক আগে ঠিকাদারের লোকজন এক গাড়ি বালু নিয়ে এসে আবার কাজ শুরু করে দ্রæতই শেষ করা হবে বলে জানালেও দুই-তিন দিন পরে তারা কাউকে কিছু না জানিয়ে উধাও হয়ে যায়। 

ঊর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণ কাজের আওতায় থাকা শাহপুর (উঃ) সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, উত্তর খড়কি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, শিমুলঘর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, আউলিয়াবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, রসুলপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পুরাইখোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, খাটুরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বুল্লা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সুরমা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, উত্তর বেজুরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, নোয়াপাড়া চা-বাগান সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ও মাধবপুর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কাজ কবে শেষ হবে তা কেউ জানে না। 

এ ব্যাপারে কথা বলতে ঠিকাদার আবুল কালামের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি কল রিসিভ না করায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। 

উপজেলা প্রকৌশলী আমিনুল ইসলাম মৃধা বলেন, প্রকল্পের মেয়াদকাল ৯ মাস। এ মেয়াদ বহু আগেই শেষ হয়েছে। ঠিকাদার প্রদত্ত জামানতের টাকার মেয়াদও উত্তীর্ণ হয়ে গেছে। ঠিকাদার যে পরিমাণ কাজ করেছেন সেই পরিমাণ বিলও উত্তোলন করে নিয়েছেন। আমি এখানে মাত্র কিছুদিন আগে যোগ দিয়েছি। খোঁজখবর নিয়ে ঊর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণ প্রকল্পের এই বেহাল দশা দেখে হতাশ হয়েছি। এখন ঠিকাদারকে তাগাদা দেওয়া ছাড়া কিছু করতে পারছি না।

জৈন্তাবার্তা / সুলতানা