
ছবি : সংগৃহীত
চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি ৪ দশমিক ১ শতাংশে নেমে আসবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে বিশ্বব্যাংক।
গতকাল শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) বিশ্বব্যাংকের ‘গ্লোবাল ইকোনমিক প্রসপেক্টাস’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এ পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।
এর আগে গত জুন মাসে ৫ দশমিক ৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছিল বিশ্বব্যাংক। অর্থাৎ ছয় মাস আগের তুলনায় এবার প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস ১ দশমকি ৬ শতাংশ পয়েন্ট হ্রাস করেছে সংস্থাটি। যদিও এর মধ্যে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতির পরিবর্তন হয়েছে। ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতন হয়। গত জুলাই মাস থেকেই দেশে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা বিরাজ করছে। এ ধরনের অস্থিতিশীলতার মধ্যে সাধারণত প্রবৃদ্ধির হার কমে যায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, উচ্চ মূল্যস্ফীতি, বৈদেশিক বাণিজ্যে মন্দা, আমদানি ব্যয় বৃদ্ধি, ঋণ পরিশোধের ব্যয়ের চাপসহ অভ্যন্তরীণ ও বৈশ্বিক নানা সংকটের কারণে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে। কোভিড-১৯ মহামারির অভিঘাত এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে অর্থনৈতিক পরিস্থিতি জটিল আকার ধারণ করেছে।
বিশ্বব্যাংক বলছে, বাংলাদেশের বৈদেশিক বাণিজ্যের মূল শক্তি তৈরি পোশাকশিল্প। কিন্তু ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকার ক্রেতাদের চাহিদা কমে যাওয়ায় রপ্তানি আয় কমে যাচ্ছে। উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমে যাচ্ছে এবং টাকার অবমূল্যায়নের ফলে আমদানি ব্যয় বেড়েছে।
এদিকে রাজস্ব ঘাটতির কারণে বাজেট বাস্তবায়ন কঠিন হয়ে পড়ছে। অবকাঠামো উন্নয়ন ও সামাজিক সুরক্ষা খাতে সরকারি বিনিয়োগ কমে গেছে। গ্রামীণ অর্থনীতি দুর্বল হয়ে যাওয়ায় দরিদ্র জনগোষ্ঠী আরও বেশি সংকটে পড়ছে।
সংকট কাটিয়ে উঠতে বেশ কিছু পরামর্শ দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। এর মধ্যে আছে রাজস্বব্যবস্থায় সংস্কার, রপ্তানি পণ্যে বৈচিত্র্য আনা, সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি কার্যকর করা, অবকাঠামো উন্নয়নে বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধি।
বিশ্বব্যাংকের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ইন্দরমিত গিল বলেছেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি সংকটে আছে। নীতিনির্ধারকদের উচিত হবে, দ্রুত কার্যকর সিদ্ধান্ত নিয়ে অর্থনীতির গতি পুনরুদ্ধার করা। বাংলাদেশ সরকার ইতোমধ্যে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ এবং রাজস্ব বৃদ্ধির মতো পদক্ষেপ নিয়েছে। তবে স্বল্প মেয়াদে সংকট মোকাবিলায় জরুরি ভিত্তিতে পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।
এদিকে গত অক্টোবর মাসে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) পূর্বাভাস ছিল, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদনের প্রবৃদ্ধি হবে ৪ দশমিক ৫ শতাংশ।
জৈন্তাবার্তা / সুলতানা
