কাজা রোজা রাখুন আসন্ন রমজানের আগেই
শনিবার, ০৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৬:২১

কাজা রোজা রাখুন আসন্ন রমজানের আগেই

জৈন্তা বার্তা ডেস্ক

প্রকাশিত: ২৮/০১/২০২৫ ০৫:৪১:০৯

কাজা রোজা রাখুন আসন্ন রমজানের আগেই

ছবি : সংগৃহীত


রমজান মাসের রোজা প্রাপ্তবয়স্ক সামর্থ্যবান ‍মুসলমানদের ওপর ফরজ। তবে অসুস্থতা, সফর ইত্যাদি গ্রহণযোগ্য শরঈ কারণ থাকলে রমজানে রোজা ভেঙে পরবর্তীতে কাজা করা যায়। আল্লাহ বলেন,

شَهۡرُ رَمَضَانَ الَّذِیۡۤ اُنۡزِلَ فِیۡهِ الۡقُرۡاٰنُ هُدًی لِّلنَّاسِ وَ بَیِّنٰتٍ مِّنَ الۡهُدٰی وَ الۡفُرۡقَانِ فَمَنۡ شَهِدَ مِنۡکُمُ الشَّهۡرَ فَلۡیَصُمۡهُ وَ مَنۡ کَانَ مَرِیۡضًا اَوۡ عَلٰی سَفَرٍ فَعِدَّۃٌ مِّنۡ اَیَّامٍ اُخَرَ

রমজান মাস, যাতে কুরআন নাযিল করা হয়েছে মানুষের জন্য হিদায়াতস্বরূপ এবং হিদায়াতের সুস্পষ্ট নিদর্শনাবলী ও সত্য-মিথ্যার পার্থক্যকারীরূপে। সুতরাং তোমাদের মধ্যে যে মাসটিতে উপস্থিত হবে, সে যেন তাতে সিয়াম পালন করে। আর যে অসুস্থ হবে অথবা সফরে থাকবে তবে অন্যান্য দিবসে সংখ্যা পূরণ করে নেবে। আল্লাহ তোমাদের সহজ চান এবং কঠিন চান না। (সুরা বাকারা: ১৮৫)

এ ছাড়া রমজানের দিন রোজা রেখে ইচ্ছাকৃত রোজা পানাহার বা যৌনমিলন করলে রোজা ভেঙে যাবে, রোজাটির কাজা করতে হবে, কাফফারাও দিতে হবে। অর্থাৎ ওই রোজাটির পরিবর্তে আরেকটির রোজা রাখার পাশাপাশি একটি গোলাম আজাদ করতে হবে অথবা ৬০ জন মিসকিনকে দুই বেলা ভালোভাবে তৃপ্তিসহকারে আহার করাতে হবে অথবা ধারাবাহিকভাবে ৬০টি রোজা রাখতে হবে। এ ছাড়া আরও কিছু কারণে রোজা ভেঙে যায়, কিন্তু শুধু কাজা ওয়াজিব হয়, কাফফারা দিতে হয় না।

রোজা ইসলামের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ফরজ আমল, ইসলামের মূল পাঁচ স্তম্ভের অন্তর্ভুক্ত। কোনো অসুস্থতা, অসুবিধা বা অবহেলায় রোজা ছুটে গেলে যত দ্রুত সম্ভব আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে ওই রোজার কাজা আদায় করা এবং কাফফারা ওয়াজিব হলে কাফফারা আদায় করা জরুরি। রমজানের পর প্রথম সুযোগেই রমজানের কাাজ রোজা আদায় করার চেষ্টা করা উচিত। যে কোনো ফজিতলতপূর্ণ নফল রোজার চেয়ে রমজানের কাজা রোজা আদায় করা বেশি গুরুত্বপূর্ণ।

বিশেষত পরবর্তী রমজান শুরু হওয়ার আগে অবশ্যই পূর্ববর্তী রমজানের ছুটে যাওয়া রোজার কাজা আদায় করে ফেলা উচিত।

সাহাবায়ে কেরাম পরবর্তী রমজান শুরু হওয়ার আগে পূর্ববর্তী রমজানের কাজা রোজা আদায় করাকে গুরুত্ব দিতেন। সারা বছর সুযোগ না পেলে রমজানের পূর্ববর্তী শাবান মাসে অবশ্যই কাজা আদায় শেষ করতেন। আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত রয়েছে, তিনি বলেন, আমার রমজান মাসের রোজা অবশিষ্ট থেকে যেত। আল্লাহর রাসুলের (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) খেদমতে ব্যস্ত থাকার কারণে আমি শাবান মাসের আগে তা আদায় করার সুযোগ পেতাম না। (সহিহ মুসলিম: ১১৪৬) অর্থাৎ সারা বছর সুযোগ না পেলে রমজানের আগের মাসে গুরুত্ব দিয়ে কাজা রোজাগুলো রেখে শেষ করতেন।

মালেকী, শাফেঈ ও হাম্বলী ফকিহদের মতে কোনো ওজর না থাকলে পূর্ববর্তী রমজানের কাজা পরবর্তী রমজান শুরু হওয়ার আগেই আদায় করা ওয়াজিব। সুযোগ থাকা সত্ত্বেও পূর্ববর্তী রমজানের ছুটে যাওয়া রোজার কাজা পরবর্তী রমজানের আগে আদায় না করা গুনাহের কাজ।

হানাফী ফকিহদের মতে এটা ওয়াজিব নয়। যেহেতু কোরআনে সাধারণভাবে যে কোনো সময় রোজার কাজা আদায়ের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, কোনো সময় বেঁধে দেওয়া হয়নি। তবে তাদের মতেও কাজা রোজা যত দ্রুত সম্ভব আদায় করা সুন্নত বা মুস্তাহাব।

জৈন্তাবার্তা / জারা