অজুর সময় অজু ভে*ঙে গেলে কী করবেন?
রবিবার, ২৫ মে ২০২৫, ০৫:১৪

অজুর সময় অজু ভে*ঙে গেলে কী করবেন?

জৈন্তা বার্তা ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৬/০৪/২০২৫ ০৩:১৮:৫৮

অজুর সময় অজু ভে*ঙে গেলে কী করবেন?

ছবি : সংগৃহীত


নামাজ, কোরআন তিলাওয়াত এবং সবসময় পবিত্র থাকার জন্য অজু করতে হয়। অজু করার নির্দিষ্ট পদ্ধতি রয়েছে। অজু করার নিয়ম হলো—

১. নিয়ত করা।

‎২. বিসমিল্লাহ বলা।

‎৩. উভয় হাত কব্জি পর্যন্ত ধৌত করা।

‎৪. কুলি করা।

‎৫. নাকে পানি দেওয়া।

৬. দাড়ি ঘন হলে আঙুল দিয়ে খিলাল করা।

৭. কান মাসেহ করা।

৮. ঘাড় বা গর্দান মাসেহ করা।

৯. আঙুল দিয়ে পা খিলাল করা।

‎১০. প্রত্যেক অঙ্গ তিনবার করে ধৌত করা।

‎১১. ধারাবাহিকভাবে অজু করা।

‎১২. ডান দিক থেকে অজু শুরু করা।

এই কাজগুলো করার সময় যদি অজু ভঙ্গের কোনো কারণ ঘটে। অর্থাৎ, অজু করার সময় কারো বায়ূ বের হয়, তাহলে অজু করার মধ্যে অজু ভঙ্গের কারণ ঘটার কারণে তাকে পূর্ণ অজুই আবার করতে হয়। অর্থাৎ, নতুন করে আবার অজু শুরু করতে হবে।

পরিপূর্ণ অজু করার পর অজু ভঙ্গে কোনো কারণে ঘটলে যেমন আবার নতুন করে অজু করতে হবে, তেমনিভাবে অর্ধেক অজুর মধ্যে অজু ভাঙলেও আবার শুরু থেকে অজু করতে হবে। 

অজু ভঙের কারণ

মৌলিকভাবে অজু ভঙ্গের কারণ ৭টি। যথাক্রমে-

এক. পায়খানা ও পেশাবের রাস্তা দিয়ে কোনো কিছু বের হওয়া

যেমন বায়ু, পেশাব-পায়খানা, পোকা ইত্যাদি। (হেদায়া, হাদিস : ১/৭)

পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তোমাদের কেউ প্রসাব-পায়খানা সেরে আসলে (নামাজ পড়তে পবিত্রতা অর্জন করে নাও)।’ (সুরা মায়িদা, আয়াত : ০৬ )

আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত আছে যে, নিশ্চয় রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘শরীর থেকে যা কিছু বের হয়, তার কারণে অজু ভেঙে যায়...।’ (সুনানে কুবরা লিলবায়হাকি, হাদিস : ৫৬৮)

দুই. রক্ত, পূঁজ, বা পানি বের হয়ে গড়িয়ে পড়া। (হেদায়া : ১/১০)

আবদুল্লাহ বিন উমর (রা.)-এর যখন নাক দিয়ে রক্ত ঝড়তো, তখন তিনি ফিরে গিয়ে অজু করে নিতেন। (মুয়াত্তা মালিক, হাদিস : ১১০)

তিন. মুখ ভরে বমি করা

আয়শা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তির বমি হয়, অথবা নাক দিয়ে রক্ত ঝরে, বা মজি (সহবারের আগে বের হওয়া সাদা পানি) বের হয়, তাহলে ফিরে গিয়ে অজু করে নেবে।’ (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস : ১২২১)

চার. থুথুর সঙ্গে রক্তের ভাগ সমান বা বেশি হওয়া

হাসান বসরি রহ. বলেন, যে ব্যক্তি তার থুথুতে রক্ত দেখে তাহলে থুথুতে রক্ত প্রবল না হলে তার ওপর অজু করা আবশ্যক হয় না। (মুসান্নাফ ইবনে আবি শাইবা, হাদিস : ১৩৩০)

পাঁচ. চিৎ বা কাত হয়ে হেলান দিয়ে ঘুম যাওয়া

আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত। রাসুল (সা.) বলেন, ‘সিজদা অবস্থায় ঘুমালে অজু ভঙ্গ হয় না, তবে চিৎ হয়ে শুয়ে পড়লে ভেঙ্গে যাবে, কেননা চিৎ বা কাৎ হয়ে শুয়ে পড়লে শরীর ঢিলে হয়ে যায়।’ [ফলে বাতকর্ম হয়ে যাবার সম্ভাবনা রয়েছে] (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস : ২৩১৫; সুনানে আবু দাউদ, হাদিস : ২০২)

ছয়. পাগল, মাতাল বা অচেতন হলে

হাম্মাদ (রহ.) বলেন, যখন পাগল ব্যক্তি সুস্থ্ হয়, তখন নামাজের জন্য তার অজু করতে হবে। (মুসান্নাফ আব্দুর রাজ্জাক, হাদিস : ৪৯৩)

সাত. নামাজে উচ্চস্বরে হাসি দিলে

ইমরান বিন হুসাইন (রা.) থেকে বর্ণিত। রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি নামাজে উচ্চস্বরে হাসে, সে ব্যক্তি অজু ও নামাজ পুনরায় আদায় করবে। হাসান বিন কুতাইবা (রহ.) বলেন, যখন কোনো ব্যক্তি উচ্চস্বরে হাসি দেয়, সে ব্যক্তি অজু ও নামাজ পুনরায় আদায় করবে।’ (সুনানে দারা কুতনি, হাদিস : ৬১২)

জৈন্তাবার্তা / মনোয়ার


শীর্ষ সংবাদ: