শাল্লায় প্রধানমন্ত্রী ও এমপির প্রার্থী বলে প্রচারণা চালাচ্ছেন অবনী মোহন দাশ
শুক্রবার, ০৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০১:২০

শাল্লায় প্রধানমন্ত্রী ও এমপির প্রার্থী বলে প্রচারণা চালাচ্ছেন অবনী মোহন দাশ

শাল্লা প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ০৬/০৫/২০২৪ ০৫:৫৮:৪৬

শাল্লায় প্রধানমন্ত্রী ও এমপির প্রার্থী বলে প্রচারণা চালাচ্ছেন অবনী মোহন দাশ


সুনামগঞ্জের শাল্লার মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও স্থানীয় সংসদ সদস্য ড. জয়া সেনগুপ্তার মনোনীত প্রার্থী বলে এলাকায় প্রচার করে প্রভাব বিস্তার করে যাচ্ছেন ঘোড়া প্রতীকের প্রার্থী এড. অবনী মোহন দাশ। যা নির্বাচনি আচরণবিধি লঙ্ঘন হচ্ছে। এবং এরকম বক্তব্য ও নির্বাচনি আচরণবিধি লঙ্ঘনের দায়ে ইতিপূর্বে অর্থদণ্ডেও দন্ডিত হয়েছেন তিনি। গত ২মে উপজেলার দামপুর গ্রামে এক উঠান বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী ও এমপির মনোনত প্রার্থী বলে বক্তব্য দিয়ে সারা উপজেলায় সমালোচনার ঝড় তুলে ফেলেন তিনি।

শুধু তাই নয় আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে সামনে রেখে তিনি বিভিন্ন সময়ে বিতর্কিত বক্তব্য দিয়ে এলাকায় সমালোচিত হয়েছেন। ইতিপূর্বে তিনি প্রয়াত জাতীয় নেতা ও সাবেক মন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের উন্নয়ন কাজের অবদান ৯৮ ভাগ এ্যাড: অবনী মোহন দাশের এমন বক্তব্য দেওয়ায় সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের সমর্থক ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের তোপের মুখে পড়েছিলেন তিনি। এমন বক্তব্যের প্রতিবাদে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা প্রতিবাদের ঝড় তুলেছিলেন এড. অবনী মোহন দাশের বিরুদ্ধে। এরপর পর-ই এ্যাড: অবনী মোহন দাশ ও উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোঃ আব্দুস সাত্তার মিয়া সহ আওয়ামী লীগের সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের মধ্যে বড় ধরনের এক ফাটল দেখা দিয়েছে। এবং এ্যাড: অবনী মোহন দাশের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি মানববন্ধনও করেন স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ ও জনসাধারণ। 

তবে বরাবরের মতোই সংসদ সদস্য ড. জয়া সেনগুপ্তাও সাংবাদিকদের বলে আসছেন এবছর মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বা তার মনোনীত কোন প্রার্থী নেই। জানা যায় এই বক্তব্য দেওয়ার পর থেকে সাধারণ ভোটার ও জনসাধারণে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে। কারন এবছর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দলীয় কোন প্রতীক বা দলীয় কোন প্রার্থী নেই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা বর্ধিত সভা করে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন নির্দলীয়, নিরপেক্ষ, অবাধ ও সুষ্ঠু করার জন্য বলেছেন। এমনকি কোন এমপি ও মন্ত্রীর স্বজনরা নির্বাচন না করা সহ কেউ যেন স্থানীয় নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার করতে না পারে সে-সব নির্দেশনাও প্রদান করেন। এসব নির্দেশনা তোয়াক্কা না করেই চেয়ারম্যান প্রার্থী এডভোকেট অবনী মোহন দাশ নিজেকে প্রধানমন্ত্রী ও এমপির মনোনীত প্রার্থী বলে প্রচার করেছেন। যা এলাকায় জনসাধারণে রীতিমতো বিভ্রান্তি দেখা দিয়েছে। 

সবার অংশগ্রহণে এটা একটি উন্মোক্ত নির্বাচন। অবনী মোহন দাশের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা জানান নির্বাচনের তফসীল ঘোষণার পূর্ব থেকেই তিনি ভোটের মাঠে বিভিন্নভাবে প্রভাব কাটিয়ে আসছেন। সরকারি বা দলীয় কোন নির্দেশনা না থাকা সত্ত্বেও এমপি ও প্রধানমন্ত্রীর সমর্থিত প্রার্থী বলে বিতর্কিত বক্তব্য দিয়ে আসছেন তিনি। 

আগামী ৮ মে শাল্লা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী এডভোকেট অবনী মোহন দাশ এক নির্বাচনী সভায় নিজেকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও এমপির মনোনীত প্রার্থী বলে নির্বাচনে ভোট প্রার্থনা করেন তিনি। এরপর পর-ই ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে মুর্হুতেই ভাইরাল হয়ে যায় এবং ভিডিওটি নেট দুনিয়ায় ছড়িয়ে পড়লে স্হানীয় ভোটার ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দেয়।

এবিষয়ে দিরাই-শাল্লার সংসদ সদস্য ড. জয়া সেনগুপ্তার সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কথা মেনে কাজ করি। উপজেলা নির্বাচনে কোন এমপি ও মন্ত্রী যেন প্রভাব বিস্তার করতে না পারে সেজন্য সরকার থেকে নিষেধ করা হয়েছে। আমার কোন মনোনীত প্রার্থী নেই। সবাই যার যার নির্বাচন করছেন। এবিষয়ে জানতে চাইলে সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নোমান বখত পলিন বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী উপজেলা নির্বাচনকে সবার জন্য উন্মুক্ত করেছেন দলীয় কোন প্রতীক নেই। জনগন এত বোকা নয়, জনগন যাকে ইচ্ছে তাকেই ভোট দিবেন।

শাল্লা উপজেলা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও শাল্লা ইউপির চেয়ারম্যান আব্দুস সাত্তার বলেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন উপজেলা নির্বাচন হবে সম্পূর্ণ নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ। অবনী মোহন দাশ যে বক্তব্য দিয়েছেন এটা মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। তিনি বলেন আমি এমপি মহোদয়ের সাথে কথা বলেছি, উনি (এমপি) বলেছেন উনার কোন মনোনীত প্রার্থী নেই৷ এর আগেও অবনী বাবু আমাদের প্রয়াত নেতা সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের কাজকে অস্বীকার করে ৯৮% কাজ সে করেছে বলে এমন বক্তব্য দিয়েছিল এর জন্য আমরা প্রতিবাদও জানাইছি।

শাল্লা উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ (আল-আমিন) বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা বর্ধিত সভায় ক্লিয়ার করেছেন এবারের উপজেলা নির্বাচন হবে সম্পূর্ণ নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ। কাউকে কোন মনোনয়ন দেওয়া হয়নি৷ উনি (অবনী বাবু) যে বক্তব্য দিয়েছেন, উনি নিজেই আমাদের প্রয়াত নেতা সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের মৃত্যুর পর মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ অমান্য করে প্রতিটি নির্বাচনে নৌকার বিরোধীতা করেছেন। এমনকি বিগত উপজেলা নির্বাচনে নৌকার বিরুদ্ধে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছিলেন। সে একটা বিশ্বাসঘাতক ও প্রতারক।

এবিষয়ে এ্যাড: অবনী মোহন দাশকে মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।এমনকি তার নির্বাচনি কার্যালয়ে গিয়েও তাকে পাওয়া যায় নি। তিনি কোথায় আছেন এমন প্রশ্নের জবাবে তার অফিসে থাকা লোকজন বলেন তিনি বাহিরে মিটিংয়ে রয়েছেন।


এলএইচ