
ছবি: নিজস্ব
সুনামগঞ্জের বিশ্বম্ভরপুর উপজেলায় মরিচ ক্ষেত থেকে একটি সচল গ্রেনেড উদ্ধার করেছে সেনাবাহিনী। আজ শুক্রবার ( ১৩ জুন ) দুপুরে উপজেলার সলুকাবাদ ইউনিয়নের চালবন্দ পয়েন্ট এলাকায় বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট সেটি নিষ্ক্রিয় করে।
সেনাবাহিনী ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার দুপুরে গ্রেনেডটি প্রথমে কৃষক সাব্বির আহমদ তার জমিতে কাজ করছিলেন, হঠাৎ একটি অদ্ভুত বস্তু দেখতে পান। পড়ে অন্যান্য স্থানীয় বাসিন্দাদের দেখালে তারা বুঝতে পারেন এটি গ্রেনেড সাদৃশ্য কিছু এবং তাৎক্ষণিকভাবে বিশ্বম্ভরপুর থানায় খবর দেন তারা। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে এবং সেনাবাহিনীর বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিটকে বিষয়টি জানায়। পরে সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে গ্রেনেডটি পরীক্ষা নিরিক্কা করে নিশ্চিত হন যে এটি একটি সক্রিয় k36 অথবা M36 মডেলের গ্রেনেড। এরপর তারা গ্রেনেডটি নিরাপদ দূরত্বে গ্রেনেডটি নিয়ে যান, পরে আজ শুক্রবার দুপুরে বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট সেটি নিষ্ক্রিয় করেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শান্তিগঞ্জ সেনাবাহিনীর ক্যাম্পের ইনচার্জ লে. কর্ণেল আল হোসাইন। তিনি বলেন, গতকাল বিশ্বম্ভরপুর থানা থেকে আমাদের একটি সংবাদ দেওয়া হয়েছিলো, এখানে একটি গ্রেনেড পাওয়া গেছে। আমরা সঙ্গে সঙ্গে আমাদের হেডকোয়ার্টার্স এর যোগাযোগ করেছি, সেখান থেকে আমাদের যেভাবে করতে বলা হয়েছে আমরা সেভাবেই করেছি। এবং বিশ্বম্ভরপুর থানা থেকে একটি চিঠির মাধ্যমে আমাদেরকে অনুরোধ করা হয়েছিলো যাতে আমরা দ্রুত নিষ্ক্রিয় করে দেই। এটা গতকালেই করার কথা ছিলো কিন্তু আবহাওয়া ভালো না থাকায় ও সন্ধ্যা হওয়ায় আজকে গ্রেনেডটি নিষ্ক্রিয় করার সিন্ধান্ত নিয়েছি।
তিনি বলেন, গ্রেনেডটি অলরেডি প্রাইম করা ছিলো, যারাই এরআগে এটা হাতে নিয়েছেন বা নেওয়ার চেষ্টা করেছেন, এটা যেকোনো সময় একটা দূর্ঘটনা ঘটতে পারতো। এটি বিস্ফোরিত হলে যে কারো জান যেতে পারত।
বিশ্বম্ভরপুর থানা পুলিশকে ধন্যবাদ জানিয়য় তিনি আরও বলেন, বিশ্বম্ভরপুর থানা আমাদের সাথে যথাসময়য়ে যোগাযোগ করেন ও তাদের সহযোগিতা পেয়েছি। আমরা এটি নিরাপদভাবে নিষ্ক্রিয় করেছি। আশা করি এলাকার কেউ আর এখন বিপদ আশঙ্কায় নেই।
প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, এটি (গ্রেনেড) আমরা দেখেছি, এটি k36 অথবা M36 মডেলের একটি সক্রিয় গ্রেনেড। এটি ব্রিটিশ আর্মিতে ইস্যু করা হত। ১৯৭২ সালের পর আর এটি সরবরাহ করা হয়নি। ধারণা করা হচ্ছে গ্রেনেডটি প্রথম বিশ্বযুদ্ধ কিংবা মুক্তিযুদ্ধের সময়ে কোনোভাবে আসতে পারে।
দীর্ঘদিন গ্রেনেডটি মাটির নিচে কিভাবে সচল থাকলো? এ প্রশ্নের জবাবেই এই সেনা কর্মকর্তা বলেন, এই মডেলের যে গ্রেনেড গুলো আছে, আমরা যতটুক জানি, প্রাইম করা অবস্থায় যদি দীর্ঘদিন মাটির নিচে থাকে সেটি পরবর্তী যেকোনো সময় বিস্ফোরিত হতে পারে। এবং এটি ১০০ বছর অথবা তার চেয়েও বেশি বা কম সময় মাটির নিচে সক্রিয় থাকতে পারে।
বিশ্বম্ভরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. মুখলেছুর রহমান বলেন, একজন কৃষক তার মরিচ ক্ষেতে গ্রেনেডটি দেখে আমাদেরকে খবর দেন। আমরা উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে শান্তিগঞ্জ সেনাবাহিনীর অধিনায়ককে অবগত করি। তারা শুক্রবার এসে গ্রেনেডি নিষ্ক্রিয় করেন।
জৈন্তাবার্তা / এম সি
