
ছবি: নিজস্ব
সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরের হাওরে বোরো ধান কাটা প্রায় শেষ পর্যায়ে। সোমবার পর্যন্ত ৮৫ ভাগ জমির ধান কাটা হয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় কৃষি বিভাগ। বর্তমানে কাটা ধান ঘরে তুলতে ব্যস্ত স্থানীয় কৃষকরা।
কৃষি বিভাগ জানায়, এরই মধ্যে উপজেলার কয়েকটি ছোট হাওরের ধান কাটা সম্পন্ন হয়েছে। জগন্নাথপুরের সর্ববৃহৎ নলুয়া হাওরের ধান ৮০ ভাগ কাটা হয়েছে। এছাড়া ছোট কয়েকটি হাওরে ১৫ থেকে ২০ ভাগ জমির ধান কাটা বাকি রয়েছে। চলতি সপ্তাহের মধ্যে ধান কাটার কাজ শতভাগ শেষ হয়ে যাবে। এবার ফলন ভালো হাওয়ায় উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছড়িয়ে যাবে বলে প্রত্যাশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
সরেজমিনের কয়েকটি হাওর ঘুরে দেখা যায়, পাকা ধান গোলায় তুলতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন কৃষক-কৃষাণীরা। তাদের সাথে রয়েছেন অন্যান্য শ্রমিক ও পরিবারের লোকজন। জগন্নাথপুরের সবচেয়ে বড় নলুয়ার হাওরে এখনও পাকা ধান কাটছেন কৃষক ও শ্রমিকরা। কেউ আবার ধান মাড়াইয়ের কাজে ব্যস্ত। খলায় ধান শুকানোর কাজে কৃষকের পাশাপাশি কৃষাণীরাও ঘাম ঝরানো পরিশ্রম করছেন। তাদের সহযোগিতা করছেন পরিবারের ছোট-বড় প্রায় সব বয়সী লোকজন। ধান কাটা শুরুর দিকে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের শঙ্কা থাকলেও পরে তা কেটে যায়। বড় ধরনের কোনো প্রাকৃতিক বিপর্যয় এখন পর্যন্ত ঘটেনি। ফলে অনেকটা স্বস্তি নিয়েই হাওরে চলছে ধান কাটার ধুম। এবার বোরোর ভালো ফলনে কৃষকদের চোখে-মুখে হাসির ঝিলিক দেখা দিয়েছে।
নলুয়ার হাওরের ভুরাখালি গ্রামের কৃষক সাইদুর রহমান বলেন, সব শঙ্কা কাটিয়ে কোনো ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ ঘটার আগেই হাওরের ধান কাটা এখন শেষ পর্যায়ে। এরই মধ্যে ৮০ ভাগ ধান কাটা শেষ। সপ্তাহখানেকের মধ্যেই শতভাগ ধান কাটা শেষ হয়ে যাবে। এবার ভালো ফলন হওয়ায় সবাই খুশি।
মইয়ার হাওরের কৃষক মির্জা কাজল মিয়া বলেন, এই হাওরের ধান কাটা প্রায় শেষ। এবার ৮ কেদার জমিনে বোরো আবাদ করেছি। এসব জমির ধান কাটা সম্পন্ন। এখন ধান মাড়াই আর শুকানোর কাজ চলছে।
উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এ বছর জগন্নাথপুরের ছোট-বড় ১৫টি হাওরে ২০ হাজার ৪০০ হেক্টর জমিনে বোরো আবাদ হয়েছে। জমিতে ধানের ফলনও ভালো হয়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কাওসার আহমেদ বলেন, জগন্নাথপুরে এখন পর্যন্ত গড়ে ৮৫ ভাগ জমির ধান কাটার কাজ শেষ। ছোট ছোট হাওরে ধান কাটার কাজ শেষ পর্যায়ে। এর মধ্যে মইয়ার হাওরে শতভাগ ধান কাটা হয়ে গেছে। আশা করছি, সপ্তাহখানেকের মধ্যে সবকটি হাওরে ধান কাটা সম্পন্ন হবে। তিনি বলেন, এ বছর বোরো ফসলের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১ লাখ ২৮ হাজার ৪৬৭ মেট্রিক টন। বাম্পার ফলন হওয়ায় লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে।
জৈন্তাবার্তা / সুলতানা
