
মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার দাসেরবাজার ইউনিয়নের গোয়ালটা বাজার এলাকায় সিঅ্যান্ডবি সড়কের পাশের একটি মার্কেটের দোকান নিয়ে মালিক ও ভাড়াটের মধ্যে মালিকানা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছে।
মার্কেটের একাংশের মালিক রুয়েল আহমদের দাবি, তাদের পৈত্রিক জায়গার ওপর মার্কেটটি বানিয়ে সেখানে সুড়িকান্দি রসগ্রামের ইসলাম উদ্দিনকে লিখিত চুক্তির মাধ্যমে দোকানঘর ভাড়া দিয়েছেন। চুক্তির মেয়াদ শেষ হলেও ইসলাম উদ্দিন ঘর ছাড়ছেন না এবং ভাড়াও দিচ্ছেন না। এমনকি দোকানের ভাড়া চাওয়ায় ভাড়াটে ও তার ছেলেরা রুয়েল আহমদকে হুমকি দিচ্ছেন। এ ঘটনায় রুয়েল আহমদ ভাড়াটে ইসলাম উদ্দিন ও তার ছেলেদের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন।
তবে ভাড়াটে ইসলাম উদ্দিনের দাবি, মার্কেটের জায়গাটি তার শ্বশুরের। জায়গাটি দখল করে সেখানে মার্কেট নির্মাণ করা হয়েছে। মার্কেটের একাংশ রুয়েল আহমদের ভাই ও চাচাতো ভাইয়েরা তার কাছে বিক্রি করে দখল ছেড়েছেন। তার কাছে সব প্রমাণ আছে।
এদিকে, গত ১১ মে বিকেলে গোয়ালটাবাজার এলাকায় একটি হাতির চাঁদাবাজিকে কেন্দ্র করে মার্কেটের একাংশের মালিক রুয়েল আহমদ ও ভাড়াটে ইসলাম উদ্দিনের ছেলেদের মধ্যে ঝগড়া হয়। রুয়েল আহমদের দাবি, ইসলাম উদ্দিনের ছেলেরা তার ওপর হামলার চেষ্টা করেছেন। হত্যার হুমকিও দিয়েছেন। তবে ইসলাম উদ্দিন ও তার ছেলে আলতা হোসেন হুমকির অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। অভিযোগ পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।
লিখিত অভিযোগে রুয়েল আহমদ উল্লেখ করেছেন, গোয়ালটাবাজারে পৈত্রিক সম্পত্তিতে তাদের একটি মার্কেট রয়েছে। সেখানে তিনি নিজে একটি ফার্মেসি দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসা করে আসছেন। তার বড়ভাই যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী ফয়সল আহমদ নিজের অংশের দোকানকোঠা ২০১৬ সালে সুড়িকান্দি রসগ্রামের ইসলাম উদ্দিনকে দুই বছরের জন্য ভাড়া দেন। প্রথম দুই বছর ভাড়া নিয়মিত পরিশোধ করলেও পরবর্তীতে ভাড়াটে চুক্তি নবায়ন করেননি। ইসলাম উদ্দিন এবং তার দুই ছেলে ফরহাদ আহমদ ও আলতা হোসেন দোকান ভাড়ার টাকা না দিয়ে তা বকেয়া রাখতে থাকেন। বর্তমানে তাদের কাছে ১ লাখ ৬৮ হাজার টাকা বকেয়া রয়েছে। রুহেল আহমদ পাওনা টাকা চাইলেও তারা তা পরিশোধ করছেন না। এ নিয়ে তাদের সাথে তার মনোমালিন্য চলছে।
রুয়েল আহমদের অভিযোগ, গত ১১ মে বিকেলে তিনি ও আশপাশের ব্যবসায়ীরা হাতিকে টাকা দিচ্ছিলেন। এসময় বিবাদীরা তাকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করেন। তিনি প্রতিবাদ করায় বিবাদীরা তার দোকানে দিকে তেড়ে আসেন তাকে মারধর করার জন্য। স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তি তাকে বিবাদীদের হাত থেকে রক্ষা করেন। এ সময় তারা তাকে হত্যাসহ তার ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়ার হুমকিও দিয়েছেন। এতে তিনি ও তার পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে।
তিনি জানান, তার ভাই দীর্ঘদিন ধরে প্রবাসে রয়েছেন। মার্কেটের দোকান ঘরটি তার ভাইয়ের হলেও তিনি তা দেখাশোনা করছেন।
এ ব্যাপারে ভাড়াটে ইসলাম উদ্দিন মুঠোফোনে বলেন, মার্কেটের জায়গাটি আমার শ্বশুরের ছিল। জায়গাটি দখল করে সেখানে মার্কেট নির্মিত হয়েছে। মার্কেটের একাংশ রুয়েল আহমদের ভাই যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী ফয়সল ও তার চাচাতো ভাইয়েরা আমাদের কাছে বিক্রি করে দখল ছেড়েছেন। আমার কাছে সব ডকুমেন্ট আছে।
ইসলাম উদ্দিনের ছেলে আলতা হোসেন মুঠোফোনে বলেন, বাজারে এক ব্যক্তি হাতি দিয়ে চাঁদাবাজি করছিল। আমরা তাকে বকাবকি করেছি। রুয়েল আহমদ তাকে বকাবকি করেছি ভেবে আমাদের সাথে ঝগড়া করেছেন। আমরা তাকে হুমকি দেইনি।
এ বিষয়ে বড়লেখা থানার এসআই বিনয় ভূষন রায় বলেন, রুয়েল আহমদের নামে এক ব্যক্তির অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। জায়গাটির প্রকৃত মালিক কে- সেটা সব কাগজপত্র দেখে বলতে হবে। উভয়পক্ষকে থানায় কাগজপত্র নিয়ে আসার জন্য বলেছি।
জৈন্তা বার্তা/আরআর
