
ছবি: নিজস্ব
হবিগঞ্জের বাহুবলে আলী আহমদ (৪২) হত্যার ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের বসতঘরে অগ্নিসংযোগ, ভাংচুর ও লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে।
মঙ্গলবার (১০ জুন) বেলা দেড়টার দিকে উপজেলার ৪নং সদর ইউনিয়নের জারিয়া গ্রামে এঘটনাটি ঘটে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ৪নং সদর ইউনিয়নের জারিয়া গ্রামে গত সোমবার জমিতে হালচাষ নিয়ে কথা-কাটাকাটির জের ধরে দু'পক্ষের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে আলী আহমদ (৪২) নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হয়। এ ঘটনায় প্রতিপক্ষের লোকজন আত্মগোপনে চলে গেলে বাড়িঘর পুরুষ শূন্য হয়ে পড়ে। আর এ সুযোগে বাদী পক্ষের লোকজন কর্তৃক আসামী পক্ষের পুরুষ শূন্য বাড়িতে অগ্নিসংযোগ, ভাংচুর ও লুটপাট করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
সরেজমিনে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, জারিয়া গ্রামের সবুজ মিয়ার একটি বসতঘরে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। মুহূর্তেই মধ্যেই বসতঘরটি আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।পাশাপাশি সাবাজ মিয়া, ফুল মিয়া, সিজিল মিয়া, ওয়াহিদ মিয়া, শফিক মিয়া, আব্দুর নুর, সাইকুল ইসলাম, হারুন মিয়া ও স্থানীয় ওয়ার্ড মেম্বার আউয়াল ও আলিম উল্লাহর বসতঘর ভাংচুর ও লুটপাট করা হয়েছে। এতে প্রায় ১০ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
এ ঘটনার খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক বাহুবল মডেল থানার এস আই আবু রায়হান ও এস আই সাদ্দাম হোসেন এর নেতৃত্বে একদল পুলিশ এবং পরবর্তীতে ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তা জগদীশ দাসের নেতৃত্বে একদল ফায়ার সার্ভিস কর্মী ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাহুবল মডেল থানার এস আই আবু রায়হান বলেন, আমরা সকাল থেকে গ্রামে ডিউটিতে আছি, কিন্তু বাদী পক্ষের লোকজন অনেক বেশি হওয়ায় একদিকে গেলে অন্যদিকে সমস্যা হয়ে যায়। আমরা গ্রামের উত্তর পাশে ছিলাম, সেখান থেকে আগুনের খবর পেয়ে দ্রুত ছুটে এসে দেখি বসতঘরটি আগুনে পুড়ে যাচ্ছে। আমরা তাৎক্ষণিক আগুন নিভানোর চেষ্টা করি এবং ফায়ার সার্ভিসের লোকজনকে খবর দেই, পরে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়।
এদিকে বেলা ১ টার দিকে ময়নাতদন্তের পর নিহতের মরদেহ বাড়িতে আনা হয়েছে। বেলা আড়াইটার দিকে জানাজার নামাজ শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।
নিহতের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, তার স্ত্রী ৪০ দিনের শিশু সন্তানকে কোলে নিয়ে হাউমাউ করে কান্নায় ভেঙে পড়ছেন। কান্নাজড়িত কন্ঠে এ প্রতিনিধিকে জানান, আমার ৩ ছেলে ও এক মেয়ে সন্তান রয়েছে, তাদেরকে এখন কে দেখবে! আমার স্বামী নির্দোষ তিনি মারামারি আটকাতে গেলে প্রতিপক্ষের লোকজন ইচ্ছাকৃতভাবে আমার স্বামীকে ফিকলের আঘাতে হত্যা করেছে। আমি আমার স্বামী হত্যার বিচার চাই, আসামীদের সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসি চাই।
জৈন্তাবার্তা / মনোয়ার
