গোলাপগঞ্জে ব্যবসায়ীর ওপর হা*মলার অভিযোগ
বুধবার, ১৬ জুলাই ২০২৫, ০৫:০৮ AM

গোলাপগঞ্জে ব্যবসায়ীর ওপর হা*মলার অভিযোগ

মো. বদরুল আলম, গোলাপগঞ্জ প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৭/০৬/২০২৫ ০১:৫২:৩০ PM

গোলাপগঞ্জে ব্যবসায়ীর ওপর হা*মলার অভিযোগ


সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার ঢাকাদক্ষিণ কাঁচা বাজারের অস্থায়ী ব্যবসায়ী রায়গড় গ্রামের ফয়জুল ইসলামের ওপর হামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। রোববার সন্ধ্যায় ঢাকাদক্ষিণ কাঁচা বাজারে এ ঘটনা ঘটে। 

সোমবার সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এমন অভিযোগ করেন কাঁচা বাজারের ব্যবসায়ী ভুক্তভোগী ফয়জুল ইসলামের ছেলে তারেক আহমদ। 

লিখিত বক্তব্যে তারেক আহমদ বলেন, আমার পিতা ফয়জুল ইসলাম ঢাকাদক্ষিণ কাঁচা বাজারের একজন ব্যবসায়ী। আমার পিতা ফয়জুল ইসলামকে ব্যবসায় সহযোগিতা করে আসছি আমি ও আমার ছোট ভাই তায়েফ আহমদ। আমার পিতা ফয়জুল ইসলাম দীর্ঘ ৩০ বছর যাবত ঢাকাদক্ষিণ কাঁচা বাজারে ব্যবসা করে আসছেন। ৫ আগস্টের পর থেকে অদ্যাবধি ঢাকাদক্ষিণ কাঁচা বাজারে দুলাল আহমদ রুপন ও খন্দকার মতিউর রহমান মাহতাব উদ্দিন গ্রুপ চাঁদাবাজিসহ নানা অপকর্ম করে আসছেন। তাদের এসব অপকর্মের বিরুদ্ধে কেউ প্রতিবাদ করলে তাকে এলাকাছাড়া হতে হয়। নতুবা মুখ বুজে এসব অপকর্ম মেনে নিয়ে প্রতিদিন চাঁদা দিতে হয়। 

গত রোববার (১৫ জুন) আমার পিতা ফয়জুল ইসলামের দোকানে কাঁচামাল কম বিক্রি হয়। এসময় আমার পিতা চাঁদা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে রুপন আহমদ ও খন্দকার মতিউর রহমান মাহতাব উদ্দিন ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। তারা দোকানের কাঁচামাল লাথি মেরে যত্রতত্র ফেলে দেন এবং আমার পিতা ফয়জুল ইসলামকে মাটিতে ফেলে মারধর করতে থাকেন। এসময় আমি ও আমার ছোট ভাই তায়েফ আহমদ ঘটনাস্থলে ছিলাম। 

আমরা আমাদের পিতাকে মারধর করতে বাধা প্রদান করলে ক্ষিপ্ত হয়ে আমাদেরকেও মারধর করা শুরু করে তারা। এসময় আমরা প্রাণে বাঁচতে চেষ্টা করি। এরপরও আমাদেরকে মেরে শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম করে। এরপর সেনাবাহিনী আমাদেরকে উদ্ধার করে গোলাপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেয়। 

লিখিত বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, খন্দকার মতিউর রহমান মাহতাব উদ্দিন গোলাপগঞ্জ উপজেলার ঢাকাদক্ষিণ ইউনিয়ন বিএনপির সহ-সাধারণ সম্পাদক ও দুলাল আহমদ রুপন ঢাকাদক্ষিণ ইউনিয়ন বিএনপির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্বে আছেন। তাদের সাথে বখাটে ছাত্রদল নেতা আবু বক্কর, হারুন মিয়ার ছেলে সায়েল আহমদ, রায়গড় গ্রামের পুরান বাজার এলাকার মৃত ওয়ারিছ আলীর ছেলে যুবদল নেতা সাদিকুর রহমান খন্দকার (সাদেক), রায়গড় গ্রামের মৃত মুহিব আলীর ছেলে যুবদল নেতা কামরুজ্জামান জুনাকসহ ১০ থেকে ১৫ জন সন্ত্রাসী আগ্নেয়াস্ত্রসহ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে রাত অনুমানিক ১০টায় ঢাকাদক্ষিণ বাজারে মহড়া দেয়। 

এসময় আমরা খবর পাই আমাদের চাচা পশ্চিম রায়গড় এলাকার তাজুল ইসলাম ও আমাদের বাড়িতে আক্রমণ করার প্রস্তুতি নিচ্ছে। বিষয়টি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে অবগত করলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। এরপর আমার চাচা সুয়া মিয়া উনার স্ত্রীকে নিয়ে ঢাকাদক্ষিণ বাজারে চিকিৎসা নিতে আসেন। চিকিৎসা শেষে বাড়ির ফেরার পথে দক্ষিণ রায়গড় শেখ সাহেবের বাড়ির নিচে একা পেয়ে রুপন ও মাহতাব গ্রুপের সদস্যরা অতর্কিত হামলা চালায়। 

রুপন ও মাহতাব গ্রুপের সদস্য কামরুজ্জামান জুনাক, সাদেক ও বক্করের হামলায় আমার চাচা সুয়া মিয়া ও চাচি গুরুতর আহত হন। চাচির নাকের হাড় ভেঙে গেলে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর হেফাজতে গোলাপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নেন। এখনও আমাদের কয়েকটি পরিবার আতঙ্কিত অবস্থায় আছে। যে কোনো সময় দুলাল আহমদ রুপন ও খন্দকার মতিউর রহমান মাহতাব উদ্দিন গ্রুপ আমাদের ওপর আক্রমণ করতে পারে। 

দুলাল আহমদ রুপন ও খন্দকার মতিউর রহমান মাহতাব উদ্দিন গ্রুপের সাথে রয়েছে বিভিন্ন অস্ত্র মামলার সাজাপ্রাপ্ত সাবেক আসামি, নারী নির্যাতনকারী, মাদকাসক্ত চিহ্নিত বেশ কয়েকজন অপরাধী। এরা মাদক সেবনসহ যাবতীয় কুকর্ম প্রতিদিন সন্ধ্যায় ঢাকাদক্ষিণ কাঁচা বাজারের টং ঘরে বসে করে থাকে। এরা প্রভাবশালী হওয়ায় আমার পিতা ও আমাদের ওপর আক্রমণ করেও এরা থেমে থাকেনি। গোলাপগঞ্জ মডেল থানায় 

একটি মিথ্যা হয়রানিমূলক মামলা করেছে। আমি এই ঘৃণ্য ঘটনার জন্য তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করছি। পাশাপাশি আমার পরিবার ও চাচাদের পরিবারের সদস্যরা নিরাপত্তা চাইছি। আমি সুষ্ঠু বিচারের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে সমাজের সর্বস্তরের মানুষ, সাংবাদিক, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ও প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করছি। 

জৈন্তা বার্তা/আরআর