
ছবি নিজস্ব
হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জে এবার লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি বোরো ধান উৎপাদন হয়েছে বলে জানিয়েছে কৃষি বিভাগের। আমন ধান আবাদে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করার পাশাপাশি কৃষকদের চাষের প্রশিক্ষণ দিয়েছে কৃষি বিভাগ। ছিল কৃষকদের প্রশিক্ষণ ও মাঠ পর্যায়ে তদারকিও। কারণে তবে চলতি মৌসুমে উচ্চ ফলন ও হাইব্রিড ধান আবাদ লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করার অন্যতম কারণ বলে জানা গেছে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এ বছর আজমিরীগঞ্জ উপজেলার ৫টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভা মিলিয়ে ১৪ হাজার ৬২৫ হেক্টর জমিতে ধান আবাদ করা হয়েছে।
সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, বোরো ধান কাটা শুরু হওয়ায় উৎসবমুখর পরিবেশে চারদিকে। মাঠে মাঠে সোনার ধান দেখে হাসি ফুটেছে কৃষকের মুখে। দিন-রাত হাড়ভাঙা পরিশ্রম করছেন কৃষকরা। সকালে কাঁচি হাতে বের হয়ে ধান কাটা শেষে সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরছেন কৃষকরা। কাটা ধান জমিতেই বিছিয়ে রাখছেন। শুকানোর পর ধান ভাঙার মেশিন দিয়ে মাড়াই করছেন। আবার কেউ কেউ ধান কাটার মেশিন দিয়ে কাটছেন। মনের আনন্দে কৃষাণী সেই ধান ঘরে তুলছেন।
সব মিলিয়ে আজমিরীগঞ্জ উপজেলায় ফসলের মাঠজুড়ে এখন কৃষকের ফলানো ধানের ছড়াছড়ি। বোরো ধানের চনমনে গন্ধে মাতোয়ারা কৃষক-কৃষাণীরা। দিগন্তজোড়া মাঠ সেজেছে ধানের সোনালি-হলুদ রঙে। ঘাম ঝরানো স্বপ্নের সোনার ফসল ঘরে তুলতে শুরু করেছেন কৃষকরা। সেই সঙ্গে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন কৃষাণী ও পরিবারের ছোট ছেলে-মেয়েরাও। ধান নিয়ে তারা মেতেছেন এক অন্যরকম উৎসবে। কৃষাণী বাড়ির আঙিনায় ধান শুকাতে তা গোবর-মাটি দিয়ে প্রস্তুত করছেন। ধান মাড়াইয়ের পর কৃষাণী রোদে শুকাচ্ছেন। রাত জেগে ধান সিদ্ধ করছেন। দিনে আবার সিদ্ধ ধান রোদে শুকাচ্ছেন। যেন দম ফেলার সময় নেই কৃষক-কৃষাণীর।
এবার বোরো ধানের ফলন রেকর্ড ছাড়াবে বলে আশা করছেন স্থানীয় কৃষি বিভাগের কর্মকর্তা ও কৃষকরা। উপজেলার কৃষকরা জানান, এবার বোরো ধানের বাম্পার ফলনে তারা বেজায় খুশি।
আজমিরীগঞ্জের উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. লুৎফে আল মঈজ জানান, এ বছর বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। সময়মতো সার ও বীজের পর্যাপ্ত সরবরাহ, মাঠ পর্যায়ে তদারকি, কৃষকদের বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শ দেয়ার কারণে ১৪ হাজার ৬৩০ হেক্টর জমি চাষ হয়েছে- যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৫ হেক্টর বেশি হয়েছে। বাজারে ধানের দামও এবার ভালো। এভাবে ধানের দাম থাকলে কৃষকরা অনেক লাভবান হবেন।
জৈন্তা বার্তা/আরআর
